পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অনাহুতের অত্যাচার।
৪২৭

অনুরোধে লোকটী জলযোগ করিলেন। পরে শান্ত হইয়া, তিনি বিদ্যাসাগরের সাক্ষাৎকার-প্রার্থী হইলে, বিদ্যাসাগর মহাশয় আর আত্মগোপন করিতে পারেন নাই। তখন লোকটি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রকৃত মহত্ত্বানুভব করিয়া পরম পুলকে বিদায় গ্রহণ করেন।

 অনেকেই আবার সাক্ষাৎকার জন্য অসময়ে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের উপর উৎপীড়ন করিতেন। এক বার উত্তরপাড়া হইতে কতকগুলি লোক তাঁহার বাদুড়বাগানের বাড়ীতে তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসেন। উদ্দেশা,—চাকুরী প্রার্থনা। এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কনিষ্ঠা কন্যা সাংঘাকিরূপে পীড়িতা ছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় উপরে তাঁহার শুশ্রূষা করিতেছিলেন। মন অত্যন্ত চঞ্চল ছিল। এমন অস্থায়, উপস্থিত ব্যক্তিরা তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে চাহেন। সেই সময়ে ডাক্তার অমূল্যচরণ বসু মহাশয় নীচে এক স্থানে উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি উপস্থিত ব্যক্তিগণকে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মনের অবস্থা জানাইয়া তাহাদিগকে সময়ান্তরে আসিতে বলেন। তাঁহারা তাঁহার কপা শুনিলেন না; অধিকন্তু চাকরের দ্বারা বিদ্যাসাগর মহাশয়কে সংবাদ পাঠাইয়া দেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিয়া পাঠান,—“অদ্য আমার মন বড়ই চঞ্চল। কন্যায় কাছ-ছাড়া হইতে পারি না, আপনারা অন্য দিন আসিবেন।” লোক-কয়টী এ কথা না নিয়া উপরে যাইবার জন্য সিঁড়ির উপরে উঠিলেন। তখন বিদ্যাসাগর মহাশয় উপব হইতে নামিয়া আসিয়া একটু বিরক্তি সহকারে বলিলেন,—“আপনারা বড়ই গরজ বুঝেন। আপনাদের কি