পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।
৪৪৯

সাগর মহাশয় আপনাকে লইয়া চারি ভাই ও পিতা মাতা এই কয়জনের নামে ছয়ভাগে ছাপাখানার অংশ করিতে চাহিয়াছিলেন। পরে সালিসীতে ধার্য্য হয়, ছাপাখানায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ই সম্পূর্ণ সত্ববান্। এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তিন ভ্রাতা বিদ্যমান ছিলেন,—দ্বিতীয় দীনবন্ধু ন্যায়রত্ন, তৃতীয় শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন এবং ষষ্ঠ ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিপূর্ব্বে চতুর্থ, পঞ্চম ও সপ্তম ভ্রাতা ইহলীলা সংবরণ করিয়াছিলেন। ইহার পর বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবদ্দশায় ন্যায়রত্ন মহাশয়ের দেহান্তর হয়। ইনি পণ্ডিত ও পরোপকারী ছিলেন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় ভ্রাতৃবর্গ ও অন্যান্য আত্মীয়ের সতত শুভ কামনা করিতেন। তাঁহাদের মঙ্গল চেষ্টায় তাঁহার অনেক অর্থ ব্যয় হইত। সকলকেই তিনি সাধ্যানুসারে সন্তুষ্ট করিবার চেষ্টা করিতেন; কিন্তু তিনি প্রায়ই দীর্ঘশ্বাসে চক্ষের জল ফেলিতে ফেলিতে বলিতেন—“সন্তুষ্ট কাহাকেও করিতে পারিলাম না। আমার কথামালায় যে বৃদ্ধ ও ঘোটকের গল্প আছে, আমি সেই বৃদ্ধ।”

 এই সময় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রীতি ও প্রবৃত্তি জন্মিয়াছিল। ইহার পূর্বে ইনি এই চিকিৎসার উপর বীতশ্রদ্ধ ছিলেন। ১৮৬৬ সালে বিখ্যাত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাবিদ বেরিণী সাহেব কলিকাতায় আসিয়া হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় প্রবৃত্ত হন। কলিকাতার বহুবাজারনিবাসী ডাক্তার রাজেন্দ্রনাথ দত্তের সহিত বেরিণী সাহেবের বেশ সংপ্রীতি হইয়াছিল। রাজেন্দ্র বাবু ইতিপূর্ব্বে হোমিওপ্যাথিক শিক্ষানুশীলনে কতকটা মনোযোগী হয়াছিলেন। বেরিণী