পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬০
বিদ্যাসাগর।

ব্যবস্থা হইয়াছিল। তিনি স্বয়ং কলিকাতায় আসিয়া ম্যালেরিয়ার সেই ভীষণ সর্বনাশকারিতার সংবাদ তাৎকালিক ছোটলাট গ্রে সাহেবের কর্ণগোচর করেন। গ্রে সাহেব বাহাদুর সবিশেষ তথ্য নির্দ্ধরণার্থ প্রবৃত্ত হন। তথ্য-নির্ণয়ে অবশ্য কালবিলম্ব হইল না। সাহায্যের আবশ্যকতা বিবেচনায় স্থানে স্থানে ডিস্পেন্সারি খোলা হইল। জাতিবর্ণনির্ব্বিশেষে পীড়িত ব্যক্তিগণ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের, “ডিস্পেন্সারি” হইতে ঔষধ, পথ্য ও পয়সা পাইত। তিনি প্রায় দুই সহস্র টাকার বস্ত্র বিতরণ করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় নামের প্রত্যাশায় এ সদনুষ্ঠানে প্রবৃত্ত হন নাই। কিন্তু তৎকালে হিন্দুপেট্রিয়ট প্রমুখ সংবাদপত্রে তাঁহার নামে একটা আকাশভেদী জয়জয়কারধ্বনি উথিত হইয়াছিল।[১]

 এই সময় প্যারীচাঁদ বাবুর ভ্রাতুস্পুত্র ডাক্তার গঙ্গানারায়ণ মিত্র মহাশয় বিদ্যাসাগর মহাশয়কে অনেক সাহায্য করিতেন। তাঁহার উপর “ডিস্পেন্সারির” সম্পূর্ণ ভার ছিল। কুইনাইন বড় মুল্যবান, অথচ রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি হইতেছিল। এইজন্য গঙ্গানারায়ণ বাবু পরামর্শ দেন যে, কুইনাইনের পরিবর্ত্তে “সিঙ্কোনা” ব্যবহার করা হউক। বিদ্যাসাগর মহাশয় বলেন,—“গরীবের রোগ বলিয়া, প্রকৃত ঔষধ ব্যবহার করিবে না; এও কি কখন হয়? দুঃখী ধনী সবারই প্রাণ তো একই; পরন্তু রোগও এক।” গঙ্গানারায়ণ বাবু বিদ্যাসাগরের মহত্ত্বে ডুবিয়া গেলেন; যে সব রোগী ঔষধ লইবার জন্য

  1. Hindu Patriot 1969