পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দানে কৌতুক।
৪৬১

“ডিস্পেন্সারিতে” আসিতে পারিত না, বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাদের বাড়ীতে গিয়া স্বয়ং ঔষধ-পথ্য দিয়া আসিতেন।

 প্যারীচরণ বাবু বিস্থাসাগর মহাশয়ের প্রাণের প্রিয়তম সুহৃদ্। মৃত্যুর পর তাঁহার পরিবারবর্গ বিদ্যাসাগরের সেই সাদর স্নেহে বঞ্চিত হন নাই। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট তাঁহারা চিরকৃতজ্ঞ। প্যারী বাবুর জ্যেষ্ঠপুত্র শ্রীযুক্ত ক্ষেত্রনাথ মিত্র এখন মুনসেফ এবং কনিষ্ঠ পুত্র শ্রীযুক্ত অবিনাশচন্দ্র মিত্র জজ আদালতের সেরেস্তাদার। বঙ্গবাসী কলেজের শ্রীযুক্ত গিরিশচন্দ্র বসু তাঁহার জামতা। গিরিশ বাবু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রাণাপেক্ষা প্রিয় ছিলেন। এখনও উভয় সংসারে পূর্ব্ববৎ সদ্ভাব বিদ্যমান আছে। বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রায়ই গিরিশ বাবুর নিকট আপন জীবনের গল্প করিতেন।

 বর্ধমানে মালেরিয়ার প্রাবল্য এবং প্যারীচাঁদ বাবুর সহিত সৌহার্দ্দ জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয়কে অনেক সময় বর্দ্ধমানে যাইতে হইত। বর্দ্ধমানের দুঃস্থ দরিদ্রমাত্রেই বিদ্যাসাগরকে দয়ার সাগর ও দাতা বলিয়া চিনিত। তিনি ট্রেন হইতে ষ্টেশনে নামিলেই তাহারা বিদ্যাসাগর মহাশয়কে ঘেরিয়া দাঁড়াইত। একবার একটা দীন-হীন মলিন বালক তাঁহার নিকট একটী পয়সা ভিক্ষা চাহে। তাহার কঙ্কালসার জীর্ণ শীর্ণ দেহ ও ধূলি-ধূসরিত মলিন মুখখানি দেখিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় অত্যন্ত দয়ার্দ্র হইয়াছিলেন। তাহার দারিদ্র্য-মালিন্য-ক্লিষ্ট মুখে কি যেন একটু জ্যোতিঃপ্রভা মিশ্রিত ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় সেই জন্যই একটু কৌতূহলাক্রান্ত হইয়া তাহার সহিত একটু ঘনিষ্ঠভাবে কথাবার্ত্তা কহিয়াছিলেন। তিনি বলেন,—“আমি