পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রামের রাজ্যাভিষেক।
৪৬৭

সাগর মহাশয় লিখিত রাজ্যাভিষেকের মুদ্রাঙ্কন বন্ধ করিয়া দেন। নারায়ণ বাবু মুদ্রিত ছয় ফর্ম্মা আমাদিগকে দেখিতে দিয়াছিলেন। পুস্তকের ভাষা অধিক সংযত ও মার্জ্জিত। এইখানে ভাষার একটু নমুনা দিলাম,—

 “আমি দীর্ঘ কাল অকণ্টকে রাজ্যশাসন ও প্রজাপালন করিলাম। লোকে যে সমস্ত সুখসম্ভোগের অভিলাষ করে, আমি তদ্বিষয়ে পূর্ণাভিলাষ হইয়াছি, এইরূপে সৰ্বসুখসম্পন্ন হইয়াও, এক বিষয়ে বিষম অসুখী ছিলাম; ভাবিয়াছিলাম, সংসারাশ্রমসংক্রান্ত সকল সুখের সারভূত পুত্রমুখ-সন্দর্শন-সুখে বঞ্চিত থাকিতে হইল। সৌভাগ্যক্রমে, চরম বয়সে, সেই সর্ব্বজন-প্রার্থনীয় অনির্ব্বচনীয় সুখের অধিকারী হইয়াছি। পুত্র অনেকের জন্মে, কিন্তু কোনও ব্যক্তিই আমার সমান সৌভাগ্যশালী নহেন। কেহ কখনও রামসম সর্ব্বগুণাস্পদ পুত্র লাভ করিতে পারেন নাই। ফলতঃ কোন বিষয়েই আমার আর প্রার্থয়িতব্য নাই; কেবল রামকে সিংহাসনে সন্নিবেশিত দেখিলেই, সকল সুখের একশেষ হয়। গুণ, বয়স, লোকানুরাগ বিবেচনা করিলে, রাম আমার সর্ব্বতোভাবে সিংহাসনের যোগ্য হইয়াছে; তাহাকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করিয়া, স্বয়ং রাজকার্য্য হইতে অবসৃত হই। শরীর ক্ষণভঙ্গুর, বিশেষতঃ আমার চরম দশা উপস্থিত; কখন কি ঘটে, তাহার কিছুই স্থিরতা নাই, অতএব এ বিষয়ে কালবিলম্ব করা বিধেয় নহে। যদি এক দিনের জন্য রামকে সিংহাসনারূঢ় দেখিয়া, এই জরাজীর্ণ শীর্ণ কলেবর পরিত্যাগ করিতে পারি, তাহা হইলেই আমার জীবনযাত্রা সফল হয়।

 মনে মনে এই সমস্ত আলোচনা করিয়া বাজা দশরথ অমাত্য