পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৭২
বিদ্যাসাগর।

 দেনার দায়ে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সাধের ছাপাখানা বিক্রীত হইল। এই ছাপাখানায় কার্য্য-সৌকর্য্যার্থ তিনি যে কি পরিশ্রম করিয়াছিলেন এবং কি উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিয়াছিলেন, পাঠক, তাহা অবগত আছেন কি? ছাপাখানায় ইংরেজী বর্ণাক্ষরে ৭০।৭২টী ঘর; বাঙ্গালায় প্রায় ৫০০ ঘর। ‘র’ ফলা, ‘ঋ’ ফলা, ‘ষ’ ফলা, এমন কত আছে। এই সব অক্ষর-যোজনা সামান্য কষ্টকর নহে। কোথায় কোন অক্ষরটা থাকিলে অক্ষর-যোজকের যোজনাপক্ষে সুবিধা হইবে, বিদ্যাসাগর মহাশয় বহু পরিশ্রম করিয়া তাহা নির্দ্ধারিত করেন। ইহার পূর্বে অক্ষরযোজনার এমন সুবিধা ছিল না। তিনি অক্ষরসংরক্ষণের যে ব্যবস্থা করিয়াছিলেন, অনেক স্থলেই তাহা অনুকৃত হইয়া থাকে। তাহার নাম “বিদ্যাসাগর সার্ট”।

 ১৮৬৯ খৃষ্টাব্দে বিদ্যাসাগর মহাশয় মল্লিনাথের টীকাসহ মেঘদূত মুদ্রিত ও প্রকাশিত করেন।

 এইবার বড় হৃদয়বিদারক কথা। এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় জন্মের মত বীরসিংহ গ্রাম পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া আসেন। পশ্চাল্লিখিত ঘটনাটি তাঁহার দেশ-পরিত্যাগের অন্যতম কারণ।

 ক্ষীরপাইনিবাসী মুচিরাম বন্দ্যোপাধ্যায় নামে কেঁচকাপুর স্কুলের হেড পণ্ডিত কাশীগঞ্জবাসিনী মনোমোহিনী নাম্নী এক ব্রাহ্মণ-বিধবাকে বিবাহ করিতে উদ্যোগ করেন। পাত্র-পাত্রী উভয়কেই বীরসিংহ গ্রামে আনয়ন করা হইছিল। সেই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় বীরসিংহ গ্রামে উপস্থিত ছিলেন। মুচিরাম বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষীরপাই গ্রামের হালদার-পরিবারের ভিক্ষাপুত্র।