পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পুত্রের বিবাহ।
৪৮১

মঙ্গলের নিমিত্ত যাহা উচিত বা আবশ্যক বোধ হইবে, তাহা করিব, লোকের বা কুটুম্বের ভয়ে কদাচ সঙ্কুচিত হইব না। অবশেষে আমার বক্তব্য এই যে, সমাজের ভয়ে বা অন্য কোন কারণে নারায়ণের সহিত আহার ব্যবহার করিতে যাঁহাদের সাহস বা প্রবৃত্তি না হইবেক, তাঁহারা স্বচ্ছন্দে তাহা রহিত করিবেন; সে জন্য, নারায়ণ কিছুমাত্র দুঃখিত হইবেক, এরূপ বোধ হয় না এবং আমিও তজ্জন্য বিরক্ত বা অসন্তুষ্ট হইব না। আমার বিবেচনায় এরূপ বিষয়ে সকলেই সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রেচ্ছ, অস্মদীয় ইচ্ছার অনুবর্ত্তী বা অনুরোধের বশবর্ত্তী হইয়া চলা কাহারও উচিত নহে।
ইতি ৩১শে শ্রাবণ।

শুভাকাঙ্ক্ষিণঃ

(স্বাঃ) ঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মণঃ।

 এই বিবাহের সময়, নারায়ণ বাবুর জননী উপস্থিত ছিলেন না। এ বিবাহে তাঁহার মত নাই ভাবিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহাকে সংবাদ দিতে দেন নাই। নারায়ণ বাবু বলেন,—“ইহাতে যে মায়ের মত ছিল, বিবাহান্তে মা তাহা স্পষ্টই বলিয়াছিলেন।”

 বিধবা-বিবাহে নারায়ণ বাবুর জননীর সম্পূর্ণ অমত ছিল, বিদ্যাসাগর মহাশয় ইহা নিশ্চিতই সিদ্ধান্ত করিয়াছিলেন। কেননা, পাছে বধূ ও বনিতার অসদ্ভাব হয়, এই জন্যই বিদ্যাসাগর মহাশয়, নারায়ণ বাবুকে স্বতন্ত্র বাসা করিয়া দেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়, তথায় প্রায়ই যাইতেন এবং আহারাদি করিতেন।

 ইহার পর শ্বশ্রূ, পুত্র ও বধূ, সকলেই বহুদিন একত্র কালযাপন করিয়াছিলেন। নিরক্ষরা বিদ্যাসাগর-পত্নী স্বধর্ম্মে সম্পূর্ণ প্রবৃত্তিমতী হইয়াও পতি-পুত্রের স্নেহবন্ধন বশতঃ পুত্রের সংস্রব