পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮২
বিদ্যাসাগর।

পরিত্যাগ করিতে পারেন নাই। এইখানে একটা কথা বলিয়া রাখি, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পিতা মেয়েদের লেখাপড়া শিখাইতে বড়ই নারাজ ছিলেন। এই জন্য তাঁহার সকল পুত্রবধূরই লেখাপড়া শিখিবার পক্ষে বিশেষ অন্তরায় ঘটিয়াছিল।

 বিদ্যাসাগর ভণ্ড নহেন। যে কার্য্য, সাধু বলিয়া তাঁহার বিবেচনা হইয়াছিল, তৎসাধনার্থ তিনি সমগ্র সমাজের চক্ষের উপর অটল বীরত্বের পরিচয় দিয়াছিলেন। অধুনাতন যে সব কুলাঙ্গার, সম্পূর্ণ অনাচার এবং ধর্মবিরোধী হইয়াও বাহিরে হিন্দু-নামে পরিচয় দেয়, এবং হিন্দুর সংসারে স্বচ্ছন্দ-বিহারে প্রয়াস পায়, তাহাদের নরকেও স্থান নাই। এই সব ভণ্ড-পাষণ্ডের দল-পুষ্টিতে আজ সমগ্র সমাজ সন্ত্রাসিত। ভয় তাহাদিগেরই জন্য। বিদ্যাসাগর বা রামমোহন এক মুহুর্ত্তের জন্য আত্মগোপনে প্রয়াস পাইতেন না; বরং তাঁহাদের আত্ম-পরিচয়ে বীরত্বেরই বিকাশ। লোকে তাঁহাদিগকে চিনিয়াছে, সুতরাং তাঁহাদের দোষ-গুণের বিচারে সহজে বিড়ম্বনা ঘটিবার সম্ভাবনা নাই। ব্যক্ত শত্রু অপেক্ষা গুপ্ত শত্রুই ভয়ঙ্কর।