সুদৃঢ় বিশ্বাসী বলিয়া মনে করিতেন। এই জন্যই পরমহংস দেবের প্রতি তাঁহার যথেষ্ট শ্রদ্ধা-ভক্তি ছিল। প্রথম সাক্ষাৎকারে বিদ্যাসাগর মহাশয় পরমহংস দেবের সরলতার পরিচয় পাইয়াছিলেন। পরমহংস দেব বিদ্যাসাগর মহাশয়কে দেখিবার জন্য তাঁহার বাটীতে আসিয়াছিলেন। তিনি সাক্ষাৎ করিয়া বলেন, “আজি সাগরে আসিয়াছি, কিছু রত্ন সংগ্রহ করিয়া লইয়া যাইব।” ইহাতে বিদ্যাসাগর মহাশয় একটু মৃদু হাসি হাসিয়া বলেন, “এ সাগরে কেবল শামুকই পাইবেন।” ইহাতে পরমহংস দেব পরম পুলকিত চিত্তে বলেন,—“এমন না হইলে সাগরকে দেখিতে আসিব কেন?” অতঃপর বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহাকে অন্তরে স্থান দিয়াছিলেন। পরমহংস দেব যে সময়ে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সাদর-অভ্যর্থনায় আপ্যায়িত হইয়া আসন গ্রহণ করেন, সেই সময় বর্দ্ধমান হইতে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একজন আত্মীয় বন্ধু এক হাঁড়ি খাবার লইয়া আসেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় পরমহংস দেবকে তাহা আহার করিবার জন্য অনুবোধ করেন। পরমহংস দেব সরস-সহাস্য বদনে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অনুরোধ রক্ষা করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বুদ্ধি প্রবৃত্তি যেরূপই হউক, ভগবৎকৃপায় তিনি এরূপ সাধু-সমাগমে নিতান্ত সৌভাগ্যহীন ছিলেন না।
পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৩২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রামকৃষ্ণ পংমহংস।
৪৯৭