পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আনুইটি ফণ্ড।
৫০৭

শ্রীযুক্ত মহেন্দ্রলাল সরকার,—“সবস্ক্রাইবার”দের রোগাদি-পরীক্ষক। “আনুইটি ফণ্ড” যে উদ্দেশে প্রতিষ্ঠিত, সেই উদ্দেশ্যে “আলবার্ট লাইফ আসুরেন্স কোম্পানী” প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল; কিন্তু তাহা টিকে নাই। অনেকের ক্ষতি হইয়াছিল।

 ১৮৭৫ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত আনুইটি ফণ্ডে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সংশ্রব ছিল। তাঁহার মতে ‘ফণ্ড’ প্রতিষ্ঠিত হইবার পর তিন বৎসর ‘ফণ্ডের’ কার্য্য সুশৃঙ্খলায় চলিয়াছিল। ১২৮২ সালের ১৩ই পৌষ বা ১৮৭৫ খৃষ্টাব্দের ২৭শে ডিসেম্বর তিনি ডিরেক্টরদিগকে ফণ্ডের সংস্রবত্যাগের কল্পে পত্র লিখেন। ১২৮২ সালের ১৯শে পৌষ বা ১৮৭৬ খৃষ্টাব্দের ২রা জানুয়ারীতে একটা বিশেষ সভায় ডাইরেক্টরেরা তাঁহার সংস্রবত্যাগের কারণ জানিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ১২৮২ সালের ১০ই ফাল্গুন বা ১২৭৬ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বিদ্যাসাগর মহাশয় একখানি দীর্ঘ পত্র লিখিয়া সংস্রবত্যাগের কারণ বিদিত করেন। এই পত্র মুদ্রিত হইয়াছিল। পত্র খানি “ফুলিস্কেপ” কাগজের প্রায় ২০।২২ পৃষ্ঠা হইবে। পত্রের ভাষা তেজস্বিনী। সংস্রবত্যাগের কারণ যুক্তিপূর্ণ। পত্র পড়িলে এই বুঝা যায়,—

 তাৎকালিক সেক্রেটরী ও তৎদলাক্রান্ত কয়েকটি ডাইরেক্টরের একাধিপত্যে ফণ্ডের কার্য্য বিশৃঙ্খল হইতেছে ভাবিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় ফণ্ডের সংস্রব পরিত্যাগ করিয়াছিলেন।

 বাঙ্গালী পাঁচ জনে একত্র কাজ করিতে পারে না বলিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় সিদ্ধান্ত করিয়াছিলেন। ফণ্ডের বিশৃঙ্খলতার উল্লেখে তিনি স্পষ্টই এ কথা বলিয়াছিলেন। এই বিশ্বাসে তিনি প্রথমে এ ফণ্ডের কার্য্যে যোগ দিতে চাহেন নাই। পরে একান্ত অনুরোধ-পরতন্ত্র হইয়া তিনি ফণ্ডের কার্য্যে হস্তক্ষেপ করেন।