পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫১৪
বিদ্যাসাগর।

“যেনাস্য পিতরো যাতা যেন যাতাঃ পিতামহাঃ।
তেন যায়াৎ সতাং মার্গং তেন গচ্ছন্ ন দুষ্যতি॥”

মনুসংহিতা।

 পিতা পিতামহ যে পথে চলিয়াছেন, সৎপথ অবলম্বন করিয়া সেই পথেই চলিবে, তাহাতে চলিলে দোষ হয় না; কেন বাপু, সৎপথেই যদি চলিবে, তবে আবার পিতা পিতামহ কেন? আর যদি পিতা-পিতামহের পথেই চলতে হয়, তবে আবার সৎপথ কেন? দুই পথ না বলিলে, দল রক্ষা হয় না, এই না? পাছে অপরের অপর জাতির সৎপথে লোক যায়, দল ভাঙ্গিয়া যায়, এই জন্যই না মনুঠাকুরকে এত মাথা ঘামাইতে হইয়াছে। তাই বলি, ধর্ম্ম-কর্ম্ম ও সব দলবাঁধা কাণ্ড।

 শ্রীযুক্ত পঞ্চানন তর্করত্ন মহাশয় বিনীত ভাবে বলিলেন—আমার প্রকৃত অভিপ্রায় স্বতন্ত্র; তবে উপস্থিত ক্ষেত্রে মনুবচনের যেরূপ ভাব হইলে মহাশয় কিয়দ্দংশে সন্তুষ্ট হইতে পারেন, একটু যত্ন করিলে ত সে অর্থ করা যায়।

 বিদ্যাসাগর। কিরূপে সে অর্থ হয় বল।

 তর্করত্ন। ‘সতাং মার্গং’ এই স্থলে শেষের অনুস্বারটী লিপিকর প্রমাদে ঘটিয়াছে। অনুস্বার না হইয়া বিসর্গ হইলে, এই শ্লোকের অন্যরূপ অর্থ হইতে পারে। অর্থাৎ পিতা-পিতামহের অবলম্বিত পথে চলিবে। ইহা, সাধুগণের পন্থা।

 বিদ্যাসাগর। ন্যায়রত্ন, এই ছেলেটী ত ভাল দেখিতেছি।

 ন্যায়রত্ন মহাশয় প্রভৃতি তর্করত্ন মহাশয়ের বিশেষ প্রশংসা করিলেন। পরিশেষে বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন, এত যে প্রশংসা করিতেছ, ইহার পরিণাম ত ভিক্ষাবৃত্তি। ন্যায় পড়িয়াছে,