পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতৃ-পরিচয়।
২৭

হন। বিদ্যাসাগরের জন্মগ্রহণ করিবার পূর্ব্বে তুিনি আবার ফিরিয়া আসেন।

 রামজয় যখন বীরসিংহ গ্রামে প্রত্যাগমন কঁরেন, তখন তাহার পুত্রবধু ভগবতী দেবী গর্ভবতী; কিন্তু উন্মাদগ্রস্ত।[১] ভগবতী দেবী ঈশ্বরচন্দ্রকে গর্ভে ধারণ করিয়া অবধি উন্মাদগ্রস্ত হন। দশ মাস কাল এই উন্মাদ-অবস্থাই ছিল। বিচিত্র ব্যাপার! দশ মাস কাল নানা চিকিৎসায় কোন ফলোদয় হয় নাই; কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্রকে প্রসব করিবার পরেই ভগবতী দেবী রোগমুক্ত হন। তিনি আর কখনও এরূপ রোগে আক্রান্ত হন নাই। চিরকালই তিনি অটুট অবস্থাতেই দীনহীন কাঙ্গলকে অন্ন-বস্ত্র বিতরণ করিতেন; পরন্তু স্বয়ং রন্ধন এবং পরিবেশনাদি করিয়া দিবা-রাত্র অতিথি-অভ্যাগত জনকে ভোজন করাইতেন। বিদ্যাসাগরের জননীর মত দয়া-দক্ষিণকৃতী রমণী প্রায় দেখা যায় না। এই অন্নপূর্ণ স্বর্ণগর্ভা জননীর পরিচয় পাঠক পরে পাইবেন। এই করুণাময়ীরই করুণা-কণা পাইয়া, অতুল মাতৃভক্তিবলে বিদ্যাসাগর মহাশয় জগতে করুণাময় নাম রাখিয়া গিয়াছেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিতেন, যদি আমার দয়া থাকেত মা’র নিকট হইতে পাইয়াছি, বুদ্ধি থাকেত বাবার নিকট হইতে পাইয়াছি। ইংরেজীশিক্ষিত যুবক! যদি জর্জ হারবটের সেই বাণীব সার্থকতা দেখিতে চাও, একমাত্র জননীই শত শিক্ষকের সমান দেখিতে পাইবে, বিদ্যাসাগর

  1. কথিত আছে,—রামজয় ক্রদার পাহাড়ে স্বপ্ন দেখেন যে,তাঁহার বংশে এক সুপুত্র জন্মগ্রহন করিবেন। তাঁহার কীর্তি চিরস্থায়িনী হইবে।সেই সুপুত্র এই বিদ্যাসাগর। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের স্বরচিত চরিতে ইঁহার উল্লেখ পাই।