পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪০
বিদ্যাসাগর।

মূল। বিদ্যাসাগরের পরামর্শে আমি ওকালতী পরীক্ষায় প্রবৃত্ত হই। তিনি সে পরামর্শ না দিলে, হয়ত আমার সে প্রবৃত্তি আদৌ হইত না।”

 দ্বারকানাথ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অভিন্ন-হৃদয় সুহৃদ ছিলেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভক্তি করিতেন। পানদোষের জন্য পাছে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বিরক্তিভাজন হইতে হয় বলিয়া, তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট অতি সাবধানে থাকিতেন। যখন উকীল, তুখন উকীলের বেশে, যখন জজ, তখন জজের পরিচ্ছদে, দ্বারকানাথ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাসায় যাইয়া উপস্থিত হইতেন। যখন-তখন তিনি বিদ্যাসাগরের বাসায় রাত্রি যাপন করিতেন। পীড়িত-পরিত্রাণে যেমন ডাক্তার দুর্গাচরণ, জমীদার-পীড়িত প্রজা-উদ্ধারে তেমনই দ্বারকানাথ বিদ্যাসাগরের অকৃত্রিম সহায় ছিলেন। এক সময় উত্তরপাড়ার জমীদার ৺জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় মহাশয় ব্রহ্মোত্তর কাড়িয়া লইতেছেন বলিয়া, অনেক ব্রাহ্মণ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের শরণাপন্ন হন। বিদ্যাসাগর তাঁহাদের মোকদ্দমায় সাহায্য করিতেন। দ্বারকানাথ তাঁহার অনুরোধে বিনা পয়সায় অনেকের মোকদ্দমা চালাইতেন। এক দিন দ্বারকানাথ বলেন,—“পাছে আপনি মনে করেন, টাকা পাইব না বলিয়া ইহাদের মোকদ্দমা ফেরত দিলাম; তাই আপনার নিকট বুঝাইয়া বলিতে আসিয়াছি,ইহাদের কোন স্বত্বই নাই; যদি তিলমাত্র প্রমাণ পাইতাম; তবে প্রাণপণে লড়িতাম।” দ্বারকানাথের কথায় বিদ্যাসাগর মহাশয় সিদ্ধান্ত করেন, জয়কৃষ্ণ দোষী নহে। যাহার স্বত্ব নাই, সে কেন জমী ভোগ করিবে? বিদ্যাসাগর মহাশয় নিজে বলিয়াছিলেন;—“যিনি স্বত্ব প্রমাণ করিতে পারিতেন,