পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জন্ম।
২৯

কুমারগঞ্জ বীরসিংহ গ্রামের অৰ্দ্ধ ক্রোশ অন্তরে। হাট হইতে প্রত্যাগমন করিবার সময় তাঁহার সহিত পিতা রামজয়ের পথে সাক্ষাৎ হয়। রামজয় বলিলেন,—“ঠাকুরদাস, আজ আমাদের এঁড়েবাছুর হয়েছে।” রামজয় পৌত্র ঈশ্বরচন্দ্রকেই লক্ষ্য করিয়া রহস্যচ্ছলে এই কথা বলিয়াছিলেন। ইহার ভিতর কিন্তু সদ্যোজাত শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনের প্রকৃত পুর্ব্বাভাস নিহিত ছিল। এঁড়ে গরু, যেমন “একগুঁয়ে,” শিশুও তেমনই “একগুঁয়ে” হইবে, দীৰ্ঘদর্শী প্রবীণ রামজয় বোধ হয় শিশুর ললাট লক্ষণ অথবা হস্তরেখাদি দর্শনে বুঝিয়াছিলেন। ঈশ্বরচন্দ্রের জন্মও“বৃষ রাশিতে”। “বৃষ রাশিতে” জন্মগ্রহণ করিলে “একগুঁয়ে” অথবা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইতে হয়,—

বৃষবৎ সন্মাৰ্গৰ্বত্তোহতিতরাং প্রসন্নঃ সত্যপ্রতিজ্ঞোহতিবিশালকীর্ত্তিঃ।
প্রসন্নগাত্রোইতিবিশালনেত্রো বৃষে স্থিত রাত্রিপতে প্রসূতঃ।”

—ভোজ।

  ঈশ্বরচন্দ্রের “একগুঁয়েমি”র পরিচয় তাঁহার জীবনে পরিলক্ষিত হইত। “একগুঁয়ে” লোক যারা ভাল কাজ যেমন অতি ভালরূপে হয়, মন্দ - কাজ তেমনই অতি মন্দরূপে হইয়া থাকে। “একগুঁয়েমি"র ফল দৃঢ়প্রতিজ্ঞতা। এই জন্য ষ্টীফেন জিরার্ড, “একগুঁয়ে” কেরাণীকেই নিজের অধীন কর্ম্মে নিযুক্ত করিতেন। ঈশ্বরচন্দ্র দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তিনি যে কাজ ধরিতেন, সে কাজ না করিয়া ছাড়িতেন না। ভাল মন উভয় কাজে ইহার পরিচয় পাওয়া গিয়াছে।

 ঠাকুরদাস পিতার কথার প্রকৃত রহস্য বুঝিতে পারেন নাই। তিনি ভাবিইয়াছিলেন, তাঁহাদের বাড়ীতে একটা “এড়েঁ” বাছুর