পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কলেজ বাড়ী।
৫৮৩

 ১২৯২ সালের ১৭ই অগ্রহায়ণ বা ১৮১৮ খৃষ্টাব্দের ১লা ডিসেম্বর বিদ্যাসাগর মহাশয়, মতান্তরবশতঃ সংস্কৃত ডিপজিটরি হইতে আপনার সমুদায় পুস্তক তুলিয়া লইয়া আনিয়া স্বপ্রতিষ্ঠিত কলিকাতা লাইব্রেরীতে রাখিয়া দেন। কলিকাতা লাইব্রেরী এখন কলিকাতা-সুকিয়া-স্ট্রীটে অবস্থিত। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের যাবতীয় পুস্তক এইখান হইতে বিক্রীত হইয়া থাকে।

 এ সময় বিলাতফেরত সিবিলিয়ান ঋগ্বেদপ্রকাশক ৺রমেশচন্দ্র দত্তের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের আলাপ-পরিচয় হয়। রমেশ বাবু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাড়ী যাইতেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় অসুস্থ ছিলেন। তিনি রমেশ বাবুকে ঋগ্বেদ প্রকাশ সম্বন্ধে বলেন,—“ভাই, উত্তম কাজে হাত দিয়ছি, কাজটী সম্পন্ন কর। যদি আমার শরীর একটু ভাল থাকে, যদি আমি কোনরূপে পারি, তোমার সাহায্য করিব।”

 স্বয়ং রমেশ বাবু এই সব কথা নব্য-ভারতে লিখিয়াছিলেন। বিলাতফেরত শূদ্র সিবিলিয়নকে বেদ-প্রকাশে প্রশ্রয় দিয়া ব্রাহ্মণসন্তান বিদ্যাসাগর এ যুগোচিত কার্য্য করিয়াছেন। অধিকার অনধিকারের সূক্ষ্ম তত্ত্ব মর্ম্মে বিদ্যাসাগর দৃষ্টিহীন, এ ঘটনা তাহারই অন্যতম প্রমাণ। তিনি যে সে মর্ম্ম বুঝিয়াও আত্মগোপন করিয়াছিলেন, এ কথা বলিতে কাহারও সাহস হইবে না। তিনি যে সত্য-পরায়ণ।

 ১২৯৩ সালের মাঘ মাসে বা ১৮৮৭ খৃষ্টাব্দের জানুয়ারী মাসে শঙ্কর ঘোষের লেনে নূতন বাড়ীতে কলেজ ও স্কুল প্রবেশ করে। জমী ক্রয় করিতে ও বাড়ী নির্ম্মাণ করিতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ব্যয় হইয়াছিল। প্রায় লক্ষ টাকা ধার হইয়াছিল।