পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যাসাগর।
৫৯০

করাইয়া ভিক্ষুক ও ভিক্ষুকের স্ত্রীকে পেট ভরিয়া খাওয়াইয়া দেন। অধিকন্তু তিনি তাহাদিগকে দুইটি টাকা দিয়া বলেন—“প্রত্যেক রবিবার আসিয়া লুচি খাইয়া যাস্। কেবল ইহাই নহে, তাহাদের ঘর-ভাড়া স্বরূপ তিনি প্রত্যেক মাসে ৪০ আনা করিয়া দিবেন বলিয়া প্রতিশ্রুত হইয়াছিলেন।

 ফরাসডাঙ্গায় থাকিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়, প্রায়ই নিকটবর্ত্তী স্থানে বেড়াইতে যাইতেন। একবার তিনি ভদ্রেশ্বরের একটী ব্রাহ্মণ কর্ত্তৃক অনুরুদ্ধ হইয়া, তাঁহার বাড়ীতে বেড়াইতে গিয়াছিলেন। সঙ্গে ভ্রাতা শম্ভুচন্দ্র ছিলেন। ব্রাহ্মণের কুষ্ঠরোগগ্রস্ত পুত্র তামাক সাজিয়া দেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় অম্লানবদনে নির্ব্বিকারচিত্তে তামাক খাইয়াছিলেন। ফিরিয়া আসিবার সময় পথে ভ্রাতা বলিলেন,—“আপনি কেমন করিয়া, কুষ্ঠের হাতের সাজা তামাক খাইলেন?” বিদ্যাসাগর মহাশয়, গম্ভীর ভাবে উত্তর দেন,—যদি তোমার বা আমার কুষ্ঠ হইত, তাহা হইলে কি করিতাম?”

 ফরাসডাঙ্গায় অবস্থিতি কালে গবর্নমেণ্ট সহবাস-সম্মতি আইন সম্বন্ধে, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মত জানিতে চাহিয়াছিলেন। এই জন্য তিনি দিন পাঁচ ছয়ের জন্য কলিকাতায় আসেন। বহু পরিশ্রম সহকারে, নানা শাস্ত্রের আলোচনা করিয়া তিনি আইনের বিরুদ্ধে অভিমত প্রকাশ করিয়াছিলেন।[১]এতৎ


  1. রাজকুলের অনুরোধে মধ্যে মধ্যে বিদ্যাসাগর মহাশয়কে নূতন আইন-কানুন সম্বন্ধে মতামত প্রকাশ করিতে হইত। কখন তিনি কোন রাজনীতি আন্দোলন বা রাজনীতি সভার সংস্রব রাখিতেন না। একবার তিনি একটি রাজনীতি সভা সংগঠনের উদ্যোগ করিয়াছিলেন মাত্র।
    নব বার্ষিকী, ১৫৩ পৃষ্ঠা।