পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৯৪
বিদ্যাসাগর।

 প্রথম রজোদর্শনের পূর্ব্বে স্ত্রীগমন সর্ব্বথা অনুচিত। অশ্বালায়ন বলেন যে, কাহারও ঋতু দর্শনের পূর্ব্বে স্ত্রীগমন উচিত নহে। এরূপ কার্য্যে মহা প্রত্যবায় সঞ্চার হয়। অকারণ বীর্য্যত্যাগে মনুষ্য ব্রহ্মহত্যা পাপে লিপ্ত হয়।

 এইরূপ সবিশেষ পর্য্যালোচনা করিলে, ইহাই যুক্তিযুক্ত বলিয়া বোধ হয় যে, রজঃস্বলার পূর্ব্বে স্ত্রী সহবাস দণ্ডনীয় অপরাধ বলিয়া গণনীয় হইবে। ঈদৃশ আইন বিধিবদ্ধ হইলে যে, কেবল জন-সমাজের উপকার ও বালিকা পত্নীগণের সমুচিত রক্ষা হইবে, তাহা নহে; বরং শাস্ত্রানুমোদিত ধর্ম্মানুষ্ঠানের বিরোধী না হইয়া শাস্ত্রনির্দ্দিষ্ট বিধির সমর্থন বাড়িবে। উক্ত নিয়মের বিরুদ্ধাচরণ করিলে শাস্ত্রে যে দণ্ডবিধির উল্লেখ আছে, তাহা আধ্যাত্মিক; সুতরাং অধিকাংশের অগ্রাহ্য। আইনানুসারে ইহা দণ্ডের দ্বারা নিষিদ্ধ হইলে, শাস্ত্রীয় বিধি অধিকতর কার্য্যকারী হইবে। গবর্ণমেণ্টের মনোযোগ আকৰ্ষণ করিয়া এ বিষয়ে বিচারার্থ অনুরোধ করিতেছি।

 আমার প্রস্তাবিত আইনের কার্য্যকালে যাহাতে কোন প্রকার অনিষ্ট না ঘটে, সেই উদ্দেশ্যে নির্দ্দেশ করিতেছি যে, উক্ত অপরাধে পুলিশ কোনরূপ হস্তক্ষেপতা করিতে পারিবে না; পরন্তু স্ত্রী অথবা স্ত্রীর অনূঢ়াবস্থায় তাহার আইনানুমোদিত অভিভাবক ব্যতীত অপর কেহ স্বামী কর্ত্তৃক স্ত্রীর বলাৎকার সংক্রান্ত অভিযোগ আদালতে আনয়ন করিতে পারিবে না।

(স্বাক্ষর)শ্রীঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মা। ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ১৮৯১।

 এ মত অবশ্য ইংরেজীতে লিখিতে হইয়াছিল। এখানে