পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মত।
৫৯৫

অনুবাদমাত্র প্রদত্ত হইল। বলা বাহুল্য, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মতে কার্য্য হয় নাই। ইংরেজী রাজনীতিতত্ত্বের গূঢ়মর্ম্মানুভব করিবার ইহা অন্যতম সুযোগ। বিদ্যাসাগর মহাশয় বিধবা-বিবাহ সংক্রান্ত আইনের প্রার্থনা করিয়াছিলেন। সে প্রার্থনা পূর্ণ হইয়াছিল। বিধবা-বিবাহ ইংরেজ-রাজের প্রকৃতি ও নীতির অনুমোদিত। সহবাস-সম্মতি আইন সম্বন্ধে বিদ্যাসাগরের মত গ্রাহ্য হইল না। ইহা ত ইংরেজরাজের প্রকৃতি ও নীতির অনুমোদিত নহে। বিধবা-বিবাহে যে বিদ্যাসাগর, সহবাস-সম্মতি আইনেও সেই বিদ্যাসাগর।

 বিধবা-বিবাহ-বিচারে যে ভ্রম হইয়াছিল, সম্মতি আইনের বিচারে সে ভ্রম ঘটে নাই দেখিয়া, সমগ্র হিন্দুসমাজ সুখী হইয়াছিল। ইতিপূর্ব্বে বিদ্যাসাগর মহাশয়, বিধবা বিবাহের কার্য্যকারিতা সম্বন্ধে অনেকটা নির্লিপ্ত ছিলেন। এক্ষণে তাঁহাকে আবার সহবাস-সম্মতি আইনের বিপক্ষে মত দিতে দেখিয়া অনেকেই জল্পনা-কল্পনা করিয়া থাকেন যে, বিদ্যাসাগর মহাশয় বিধবা-বিবাহ সম্বন্ধে আপনার ভ্রম অনুভব করিতে পারিয়াছেন। বিধবা-বিবাহের পক্ষপাতীরা বলেন, শরীরের অসুস্থতা ও স্বদেশবাসীর দুর্ব্ব্ব্যহার, এই নিলিপ্ততার কারণ। আমাদের ধারণা, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সে ভ্রমানুভব হয় নাই। হইলে তিনি এমন কপটাচারী নহেন যে, তাহা সাধারণ্যে স্বীকার করিতে কুণ্ঠিত হইতেন। অধিকন্তু আমরা জানি, জীবনের শেষাবস্থাতেও তিনি নিজ দৌহিত্রের বিধবা-বিবাহ দিবার উদ্যোগ করিয়াছিলেন। সমাজে বিধবা-বিবাহ প্রচলনে কৃতকার্য্য না হইয়া তিনি নিরাশহৃদয়ে সমাজের উপর বিরক্ত হইয়াছিলেন। নৈরাশ্য জন্যই, বোধ হয়