পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাঠশালার শিক্ষা ।
৩৭

 পাঠশালায় প্রতিভার পরিচয়। বালক ঈশ্বরচন্দ্র তিন বৎসরে পাঠশালার পাঠ সাঙ্গ করেন। এই সময় তাঁহার হস্তাক্ষর বড় সুন্দর হইয়াছিল। তখন সর্ব্বত্র হস্তাক্ষর সমাদৃত হইত। হস্তাক্ষর বিবাহের সর্ব্বোচ্চ সুপারিস। গুরু কালীকান্ত, বালক বিদ্যাসাগরের বুদ্ধিমত্তা ও ধৃতি-ক্ষমতা দেখিয়া প্রায় বলিতেন,—“এ বালক ভবিষ্যতে বড় লোক হইবে।” এই সময় বালক বিদ্যাসাগর প্লীহা ও উদরাময় পীড়ায় আক্রান্ত হন। এই জন্য তাঁহাকে জননীর মাতুলালয় পাতুলগ্রামে যাইতে হয়। তাহার মধ্যম ভ্রাতা দীনবন্ধু তাঙ্গাদের সঙ্গে ছিলেন। পাতুল গ্রামে ক্রমাগত ছয় মাস কাল চিকিৎসা হয়। খানাকুল-কৃষ্ণনগরের সন্নিহিত কোঠারা-গ্রামবাসী[১] কবিরাজ রামলোচনের চিকিৎসাগুণে বালক বিদ্যাসাগর সে যাত্রা রক্ষা পান। পাতুলগ্রামে সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করিয়া,তিনি বীরসিংহ গ্রামে পুনরাগমন করেন। পুনরায় কালীকান্তের উপর তাহার শিক্ষাভার সমৰ্পিত হয়। কালীকান্ত ঈশ্বরচন্দ্রকে বড় ভাল বাসিতেন। প্রত্যহ সন্ধ্যার পর তিনি ঈশ্বরচন্দ্রকে পাঠশালাব'চলিত অঙ্কপ্রভৃতি শিক্ষা দিতেন। রাত্রিকালে তাহাকে কোলে করিয়া লইয়া বাড়ীতে রাখিয়া আসিতেন। এই কালীকান্তের প্রতি বিদ্যাসাগর মহাশয় চিরকাল ভক্তিমান ছিলেন।

  1. বিদ্যাসাগর মহাশহের স্বরচিত জীবন-চরিতে “কোঠোরা"স্থলে “কোটরী” মুদ্রিত হইয়াছে। “উগ্রক্ষত্রিয় প্রতিনিধি” পত্রিকার খানাকুলকৃষ্ণ নগর নিবাসী পরলোকগত মহেন্দ্রনাথ বিদ্যানিধি “পল্লীসমাজ"নামক খানাকুল-কৃষ্ণ নগরের ইতিহাসে প্রথমে ঐ ভ্রমের উল্লেখ করেন; কিন্তু তিনি এক ভ্রম শোধন করিতে, অন্য ভ্রমে নিপতিত হইয়াছিলেন। তিনি কবিরাজ শ্রীধর সুধাকরের নাম লিখিয়াছেন।