পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট।
৬২৩

মেদিনীপুর ও নদীয়া জেলাসমূহের একজন বিশেষ ইনস্পেক্টার- রূপে নিযুক্ত করেন। ইহা ভিন্ন তিনি সংস্কৃত কলেজের প্রিন্সিপালের বেতন ৩০০৲ টাকাও পাইতেন। তিনি ঐ চারিটি জেলায় বালক বালিকাগণের জন্য অনেক গুলি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এ সয়ে তাঁহাকে কলিকাতার সংস্কৃত কলেজের ও নর্ম্ম্যাল স্কুলের কার্য্যেরও তত্ত্বাবধান করিতে হইত। তাঁহার একান্ত অনুরোধে অক্ষয়কুমার দত্ত নর্ম্ম্যাল স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ গ্রহণ করেন।

 এই সমস্ত কার্য্যে ব্যাপৃত থাকিয়াও বিদ্যাসাগর মহাশয় সাহিত্য চর্চ্চায় বিরত হন নাই। ১৮৫৪ খৃষ্টাব্দে তাঁহার বাঙ্গালা ‘শকুন্তলা’ প্রকাশিত হইল। ইহার তিন বৎসর পরে তাঁহার সর্ব্বোৎকৃষ্ট পুস্তক সীতার বনবাস প্রকাশিত হয়। বর্ত্তমান কালের বাঙ্গালা গদ্যসাহিত্য ইহার সৌষ্ঠব ও সৌন্দর্যের জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয় ও অক্ষয়কুমার দত্ত মহাশয়ের নিকট ঋণী।

 রাজা রামমোহন রায় ও তাঁহার সমসাময়িক লেখকগণের ভাষা তেজোময়ী ও ভাবপ্রকাশক হইলেও অতীব জটিল ও দুর্ব্বোধ ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় ও অক্ষয়কুমার বাবুই যে আধুনিক মনোহারী বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের সৃষ্টিকর্ত্তা, ইহা বলিলে কিছুমাত্র অতিরঞ্জিত করা হয় না। যে সকল হংরাজ-লেখক রাজ্ঞী অ্যানের সময়ে ইংরাজি গদ্য বর্ত্তমান ছাঁচে ঢালিয়া ভাষার স্রোত ফিরাইয়া দিয়াছিলেন, তাঁহাদিগের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয় ও অক্ষয়কুমার স্বদেশীয় সাহিত্যসেবা বিষয় তুলনায় সমকক্ষ।

 এই সময়ে বিদ্যাসাগর মহাশয় একটি গুরুতর কার্য্যে ব্যস্ত হইয়া পড়েন। ____ খৃষ্টাব্দে এই বহুশাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণ-পণ্ডিত