পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২৪
বিদ্যাসাগর।

নির্ভীকচিত্তে প্রকাশ করিলেন যে, শাস্ত্রে হিন্দু-বিধবাদিগের চির বৈধব্য-বিধি নাই এবং বিধবা-বিবাহ শাস্ত্র-সম্মত। চতুর্দ্দিকে ভীষণ অগ্নি জ্বলিয়া উঠিল। বাঙ্গালার প্রত্যেক নগরে এবং প্রত্যেক গ্রামে তুমুল আন্দোলন হইতে লাগিল। কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ও দাশরথি রায় এই নব্য সমাজ-সংস্কারককে ব্যঙ্গ করিয়া কবিতা লিখিতে লাগিলেন। গ্রামে গ্রামে উৎসবাদি উপলক্ষে বিধবা-বিবাহ বিষয়ক গান গীত হইতে লাগিল। শান্তিপুরের তন্তুবায়ের স্ত্রীলোকদিগের শাড়ীর পাড়ে এই সম্বন্ধে গান বুনিতে আরম্ভ করিল। তখন ঘরে ঘরে স্ত্রী-পুরুষ সকলেরই মুখে কেবল এই কথা। অতঃপর এই সংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতি বাদ করিয়া রাজা রাধাকান্ত দেব স্বয়ং গবর্ণমেণ্টের নিকট আবেদন করিলেন।

 এই প্রবল ঝটিকার মধ্যে বিদ্যাসাগর মহাশয় অচল ও অটল। বিরুদ্ধ-মতসকল খণ্ডন করিয়া তিনি আর একখানি পুস্তক প্রচার করিলেন। ইহাতে তিনি যেরূপ প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য ও সুন্দর যুক্তি প্রদর্শন করিয়াছিলেন, তাহাতে এই আন্দোলন প্রায় একরূপ বন্ধ হইয়া যায়। শুধু তাহাই নহে, তিনি প্রসন্ন কুমার ঠাকুর, রামগোপাল ঘোষ, প্রতাপচন্দ্র সিংহ প্রভৃতি অনেক প্রসিদ্ধ ব্যক্তিকে নিজ মতাবলম্বী করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। ইহার পর পুনর্বিবাহিত হিন্দুবিধবাগণের সন্তানসন্ততিকে আইনসমত উওরাধিকারী করিবার জন্য গবর্ণমেণ্টের নিকট আবেদন করা হয় এবং ১৮৫৬ খৃষ্টাব্দে এই বিষয়ক আইন পাস হয়।

 ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে যখন লর্ড ক্যা__ কলিকাতা-বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন, তখন ইহার সভ্য সংখ্যা __ জন মাত্র। তন্মধ্যে