পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট।
৬২৯

থাকায়, বালককে বলে—“ঐ কলসির ভিতর কড়ি আছে। কুড়ি গণ্ডা ভাগা দিয়া লও। বালক ভাগা নিতেছে; এমন সময়ে মুদী ঘাড় ফিরাইয়া দেখিল যে, পাঁচটা করিয়া ভাগ হইতেছে। মুদী বলল—‘বেটা, পাঁচটা করিয়া গণ্ডা হয়?’ বালক থতমত খাইয়া উত্তর দিল—‘আমি ত জানি না।’ মুদী বলিল— ‘জানিস্‌নে? আচ্ছা দেখ্‌!’ এই বলিয়া সে তিনটা করিয়া ভাগ দিয়া বালককে কহিল, ‘এই রকম কুড়িটা ভাগ করিয়া লও।’ বালক চুপ করিয়া দাঁড়াইয়া থাকিলে মুদী জিজ্ঞাসা করিল— ‘দাঁড়িয়ে রহিলি যে?’ বালক মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে বলিল,—‘তা হ’লে মা যে ব’কবে!’ ধনবান্‌টি সেই চাষা বালকের ন্য়ায় বুদ্ধিহীন!”

(২)

 কলিকাতার কোন উচ্চ-পদস্থ বাঙ্গালী কর্ম্মচারী পীড়িত হইলে, চিকিৎসক তাঁকে বায়ু-পরিবর্ত্তন করিবার পরামর্শ দেন, এবং বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কর্ম্মটাঁড়স্থ বাড়িটি কিছু দিনের জন্য চাহিয়া লইবার উদ্দেশে রোগীকে সঙ্গে লইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাড়ীতে গমন করেন। চিকিৎসক বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পরিচিত, কিন্তু রোগী পরিচিত ছিলেন না। চিকিৎসক রোগীর পরিচয় দিয়া বলিলেন—“ইনি অতিশয় ভদ্রলোক।” বিদ্যাসাগর মহাশয় একটু হাসিয়া বলিলেন—“উঁহার সঙ্গে যখন আমার আলাপ নাই, তখন আপনার কথা স্বীকার করিয়া লইতে আমি বাধ্য। এ পর্য্যন্ত যাঁহাদের সহিত আমার আলাপ হইয়াছে, তাঁহাদের মধ্যে ত বড় একটা ভদ্রলোক দেখিতে পাই নাই।”