পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট।
৬৩১

গ্রাফ আপিসে অমুক সাহেবের অধীনে একটি কর্ম্ম খালি আছে। বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন—“সে সাহেবের সঙ্গে ত আমার আলাপ নাই, তাহাকে কেমন করিয়া চিঠি দিব?” লোকটি দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া বলিল,—“তা হ’লে আর আমার আশা ভরসা কিছুই নাই।” এই বলিয়া সে ক্ষুণ্ন মনে বিদায় গ্রহণ করিল। তাহার কাতরভাব দর্শনে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের হৃদয় কাঁপিয়া উঠিল। তিনি রাস্তা হইতে সেই লোকটিকে ফিরাইয়া আনিয়া, টেলিগ্রাফ আফিসের সেই সাহেবের নাম জিজ্ঞাসা করিয়া লইলেন, এবং তাঁহার নামে তৎক্ষণাৎ কর্ম্ম প্রার্থীর অনুকূলে একখানি অনুরোধ-পত্র লিখিয়া দিলেন। লোকটি পত্রখানি লইয়া যাইবার পরে, পার্শ্বস্থ জনৈক বন্ধু বিদ্যাসাগর মহাশকে বলিলেন,—“মহাশয়, আপনি অপরিচিত সাহেবকে পত্র লিখিলেন কেমন করিয়া?” বিদ্যাসাগর মহাশয় উত্তর দিলেন, “তাতে দোষ কি? সাহেব যদি আমার অনুরোধ রক্ষা করেন, তাহলে গরিবটির অন্ন-কষ্ট দুর হয়, আর যদি না করেন, তা হলে আমি তার সম্পূর্ণ অপরিচিত, তাতে আমার লজ্জা আর অপমানই বা কি?” পরে জানা গেল বিদ্যাসাগর মহাশয়ের স্বাক্ষরিত পত্র পাইয়া সাহেব আপনাকে সম্মানিত জ্ঞান করিয়াছিলেন এবং পত্রবাহককে প্রার্থিত কর্ম্মে নিযুক্ত করিয়াছিলেন।

ত্বদীয়

শ্রী বৈকুণ্ঠনাথ বসু

১৬৭, মাণিকতলা স্ট্রীট, কলিকাতা।
১০ই অশ্বিন, ১৩১৭।