পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৩২
বিদ্যাসাগর।

শ্রীযুক্ত হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ কর্ততৃক লিখিত।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের দেহান্তর হইবার পর তাঁহার স্মৃতি সম্মানার্থ যে কয়েকটি সভা হইয়াছিল, তাহাদের মধ্যে কয়েকটী সভায় পঠিত প্রবন্ধের ভাব লইয়া বঙ্গের সুপ্রসিদ্ধ লেখক ও ঔপন্যাসিক শ্রীযুক্ত হেমেন্দ্র প্রসাদ ঘোষ মহাশয় যাহা আলোচনা করিয়াছেন, নিম্নে তাহা প্রকাশিত হইল।

 বিদ্যাসাগর যেমন বাঙ্গালার বর্ত্তমান যুগে অসাধারণ ব্যক্তি, তাঁহার মৃত্যুতে বঙ্গদেশে যে শোকাচ্ছ্বাস লক্ষিত হইয়াছিল, তাহাও তেমনই অসাধারণ। তাঁহার মৃত্যুতে সমগ্র বঙ্গদেশ যেন স্বজন-বিয়োগ বেদনাবিধুর হইয়াছিল। তৎপূর্ব্বে সমগ্র দেশে এরূপ শোকাচ্ছ্বাস আর দেখা যায় নাই। ছাত্রগণ নগ্নপদে বিদ্যালয়ে গমন করিত, যুবকগন বিদ্যাসাগরের নিকট আপনাদের কৃতজ্ঞতার ঋণ স্মরণ করিয়া তাঁহার বিষয় আলোচনা করিত, প্রৌঢ়গণ তাঁহার গুণপরিচয় দিতেন। বিদ্যাসাগর ও রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র, অল্প দিনের ব্যবধানে দুইজনের মৃত্যু হয়। উভয়েই বরুেণ্য, উভয়েই বাঙ্গালীর ভক্তি অর্জ্জন করিয়াছিলেন। রাজেন্দ্রলাল সব্যসাচী রূপে এক দিকে রচনায় ও অপর দিকে সমালোচনায় ব্যাপৃত ছিলেন। কিন্তু তাঁহার কর্ম্মের গুরুত্ব উপলব্ধি করিবার ক্ষমতা জনসাধারণের ছিল না। তাঁহার কার্য্য উপলব্ধি করিবার ক্ষমতা কোবিদ-দিগেরই ছিল; এবং তাঁহার যশ স্বদেশে ও বিদেশে কোবিদ-সমাজেই আবদ্ধ ছিল। বিশেষ তিনি যে কার্য্য করিয়াছিলেন—যে মত প্রতিষ্ঠিত করিতে জীবনব্যাপী শ্রম করিয়াছিলেন, তাহাতে তাঁহাকে বাঙ্গালীর পক্ষে তাঁহার ___টের হীরক দীপ্তিতে