পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট।
৬৩৭

তাহা জীববিদ্যা ও সমাজবিদ্যার পক্ষে একটা বিষম সমস্যা হইয়া দাঁড়ায়। সেই দুর্দ্দম প্রকৃতি, যাহা ভাঙ্গিতে পারিত, কখন কেহ নোয়াইতে পারে নাই; সেই উগ্র পুরুষকার, যাহা সহস্র বিঘ্ন বিপত্তি ঠেলিয়া ফেলিয়া আপনাকে অব্যাহত করিয়াছে; সেই উন্নত মস্তক, যাহা কখন ক্ষমতার নিকট অবনত হয় নাই; সেই উৎকট বেগবতী ইচ্ছা, যাহা সর্ব্ববিধ মিথ্যাচার ও কপটাচার হইতে আপনাকে সর্ব্বতোভাবে মুক্ত ও স্বাধীন করিয়াছিল, তাঁহার বঙ্গদেশের বাঙ্গালীর মধ্যে আবির্ভাব, একটা অদ্ভুত ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্যে গণ্য হইত, সন্দেহ নাই।” পরে স্বাভাবিক নৈপুণ্য সহকারে প্রাচ্যে ও প্রতীচ্যে—ভারতে ও জগতের অন্য দেশে প্রভেদ বিশ্লেষণ করিয়া তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন;—“ভাগীরথী গঙ্গার পুণ্যধারায় যে ভূমি যুগ যুগান্তর ব্যাপিয়া সুজলা সুফলা শস্যশ্যামলা হইয়া রহিয়াছে, রামায়ণী গঙ্গার পুণ্যতর অমৃত-প্রবাহ সহস্র বৎসর ধরিয়া যে জাতিকে সংসারতাপ হইতে শীতল রাখিয়াছে, সেই ভূমির মধ্যে ও সেই জাতির মধ্যেই বিদ্যাসাগরের আবির্ভাব সঙ্গত ও স্বাভাবিক।

 রজনী বাবু তাঁহার প্রবন্ধে বিদ্যাসাগরকে অতি উচ্চস্থান দিয়াছিলেন। তিনি লিখিয়াছিলেন,—“বিদ্যাসাগর ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ! পৃথিবীতে যে সকল মহাপুরুষ মহৎকার্য্যে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছেন, বিদ্যাসাগর তাঁহাদের অপেক্ষাও মহত্তর। তিনি প্রতিভাশালী পণ্ডিত অপেক্ষাও মহত্তর। যেহেতু তিনি প্রতিভার সহিত অসামা তেজস্বিতার পরিচয় দিয়াছেন। তিনি তেজস্থি মহাপুরুষ অপেক্ষা ___ যেহেতু তিনি তেজস্বিতার সহিত