পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৩৮
বিদ্যাসাগর।

স্বার্থত্যাগের পরাকাষ্ঠা দেখাইয়াছেন। তিনি দানশীল ব্যক্তিগণ অপেক্ষা মহত্তর, যেহেতু তিনি দানশীলতা প্রকাশের সহিত বিষয়বাসনা ও আত্মগৌরব ঘোষণার ইচ্ছা সংযত রাখিয়াছেন।”

 যে সকল সভায় উপরিলিখিত প্রবন্ধগুলি পঠিত হইয়াছিল, সে সকল সভায় জনসমাগমের অভাব হয় নাই। বিদ্যাসাগরের কথা শুনিতে বাঙ্গালীর আগ্রহের অন্ত নাই। এই আগ্রহের আর এক প্রমাণ—বিদ্যাসাগরের তিনখানি বিস্তৃত জীবনী রচিত হইয়াছে। আর কোন বাঙ্গালীর ভাগ্যে এরূপ ঘটে নাই।

 বিদ্যাসাগরের হিতৈষণা ও স্বদেশপ্রীতি লইয়া অনেক কথা শুনা গিয়াছে। এই Philanthrophy ও patriotism জিনিষ দুইটা আমাদের বহুদিনের; কিন্তু নাম দুইটা বিদেশের। আমাদের দেশে লোকহিতৈষণা ধর্ম্মের অঙ্গ ছিল—তাহার স্বতন্ত্র নামের প্রয়োজন হইত না। যে সমাজে মানুষ সমাজেরই ছিল—সে সমাজে স্বদেশপ্রীতি স্বাভাবিক ছিল।

 রামেন্দ্র বাবু বলিয়াছেন,—“পাশ্চাত্যগণের মধ্যে ফিলান্‌থ্রপি নামে একটা পদার্থ আছে, তাহার বাঙ্গালা নাম লোকহিতৈষণা। তাঁহাদের এই লোকহিতৈষণাটা কোন সঙ্কীর্ণ সমাজের মধ্যে আবদ্ধ নহে, সমগ্র মানবজগৎ এই হিতৈষণার বিষয়ীভূত। এবং ইহাও বলা যাইতে পারে যে, এই হিতৈষণা পলিটিকাল ইকনমি শাস্ত্রেরও সম্পূর্ণ বিরোধী নহে। *** বিদ্যাসাগরকে এইরূপ ফিলান্‌থ্রপিষ্ট বলিলে গালি দেওয়া হয়। বিদ্যাসাগরের লোকহিতৈষিতা সম্পূর্ণ অন্য ধরণের এবং এই মৌলিক বিভেদই তাঁহার চরিত্রকে পাশ্চাত্য চরিত্র হইতে পৃথক করিয়া রাখিয়াছে। বিদ্যাসাগরের লোকহিতৈষিতা সম্পূর্ণ প্রাচীন ___ ইহা কোনরূপ