পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবন-কথা।
৬৭১

খানি ক্ষুদ্র কবিতাগ্রস্থ প্রণয়ন করেন। ইহার অনেক দিন পরে ১৮৬৪ খৃষ্টাব্দে ইঁহার প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক উপন্যাস “দুর্গেশনন্দিনী” প্রকাশিত হয়। ইঁহার অসামান্ত প্রতিভায় ও মনোহারিণী রচনায় বঙ্গবাসী বিমোহিত হইয়া পড়ে। এই একখানি গ্রন্থেই ইনি সর্ব্বোচ্চ শ্রেণীর লেখক বলিয়া পরিগণিত হন। তাহার পরে ক্রমে ইনি আরও অনেকগুলি উপন্যাস রচনা করিয়াছেন। ঐ সমস্ত উপন্যাস এমন উৎকৃষ্ট যে, উহাদের মধ্যে কোন একখানি মাত্র লিখিলেই ইনি অমরত্ব লাভ করিতে পারিতেন। ইঁহার কয়েকখানি উপন্যাস ইংরেজী ও অন্যান্য ইউরোপীয় ভাষায় অনুদিত হইয়াছে। যে ইউরোপীয়গণ বাঙ্গালীদিগকে অতি আসার অপদার্থ জ্ঞান করিয়া ঘৃণার চক্ষে দেখিয়া থাকেন, তাঁহারাই যে বাঙ্গালীর রচিত উপন্যাস নিজ নিজ ভাষায় অনুবাদ করিয়াছেন, ইহা বঙ্গবাসীর পক্ষে সামান্য গৌরবের বিষয় নহে। বঙ্কিমচন্দ্র হইতেই বাঙ্গালীর এই গৌরববৃদ্ধি। ইনিই ষে আধুনিক বঙ্গীয় উপন্যাস লেখকগণের অধিকাংশের আদর্শ, তাহাতে সন্দেহ নাই।

 বঙ্কিমচন্দ্র ১২৭৯ বঙ্গাব্দে “বঙ্গদর্শন” নামে একখানি নূতন ধরণের উচ্চশ্রেণীর মাসিক পত্র প্রকাশ করিতে আরম্ভ করেন। ইঁহার সুসম্পাদন গুণে “বঙ্গদর্শন” অচিরে প্রতিষ্ঠান্বিত হইয়া উঠিল। ৰঙ্গভাষার লেখকগণ বুদ্ধি ও গবেষণা বৃত্তি পরিচালনের এক উত্তম সুযোগ প্রাপ্ত হইলেন। ফলতঃ কি গবেষণাপূর্ণ প্রবন্ধ, কি ঐতিহাসিক তত্ত্ব, কি বৈজ্ঞানিক রহস্য, কি কবিতা, কি সমালোচনা, সর্ব্ব বিষয়ের উৎকৃষ্ট রচনাসমূহে সুশোভিত হইয়া “বঙ্গদর্শন” ঙ্গ বিদ্যালোচনা বিষয়ে যুগান্তর উপস্থিত