পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



রাজনারায়ণ বসু।

 কলিকাতার দক্ষিণ বেড়াল গ্রামে ১৮২৬ খৃষ্টাব্দে ৭ই সেপ্টেম্বর ইঁহার জন্ম হয়। ইঁহার পিতার নাম নন্দকিশোর বসু। ইনি আশৈশৰ বিদ্যানুরাগী ছিলেন। ষোড়শ বর্ষ বয়সে হিন্দু কলেজের শেষ পরীক্ষায় ইনি উত্তীর্ণ হন এবং বাটীতে মুন্সীর লিঙ্কট পারস্যভাষা উত্তমরূপ শিক্ষা করেন। পরে ১৮৫১ খৃষ্টাব্দে মেদিনীপুর গবর্নমেণ্ট স্কুলের হেডমাষ্টার নিযুক্ত হন। ইনি ব্রাহ্মধর্ম্মে দীক্ষিগত হইয়াছিলেন এবং মেদিনীপুরে থাকিবার সময় তথায় যাহাতে সমধিকরূপে ব্রাহ্মধর্ম্মের প্রচার হয়, তজ্জন্য বিশেষ চেষ্টা করিয়াছিলেন। ইঁহার উদ্যোগে, মেদিনীপুরে বালিকা বিদ্যালয়, সুরাপান-নিবারণী সভা, ব্যয়ামশালা প্রভৃতি স্থাপিত হয়। ইনি ধর্ম্মতত্ত্বদীপিকা ১ম ও ২য় ভাগ, ব্রহ্মসাধন, হিন্দুধর্মের শ্রেষ্ঠতা, ব্রাহ্মসমাজের বক্তৃত ১ম ও ২য় ভাগ, সে কাল আর এ কাল প্রভৃতি অনেকগুলি গ্রন্থ রচনা করেন। ইনি মাইকেল মধুসূদনের বন্ধু ছিলেন। ইঁহারই পরামর্শে মাইকেল “সিংহল-বিজয়” নামক একখানি বাঙ্গালা কাব্য অমিত্রাক্ষরচ্ছন্দে লিখিতে আরম্ভ করেন, কিন্তু রচনা শেষ করেন নাই। ১৮৬২ খৃষ্টাব্দে ৯ই জুন মাইকেল বিলাত যাইবার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ইঁহার পাঁচ দিন পূর্ব্বে তিনি রাজনারায়পকে একখানি বিদায়পত্র লিখেন এবং সেই পত্র মধ্যে “বঙ্গভূমির প্রভি” নামক কবিতাটি ইঁহার নিকট পাঠাইয়া দেন। রাজনারায়ণ ধর্ম্মপরায়ণ ও সরলচিত্ত ছিলেন। জীবনের শেষভাগে ইনি দেওঘর নামক স্থনে বাস করিতেন। ১৯•• খৃষ্টাব্দে ১৬ই সেপ্টেম্বর বাতরোগে ইনি পরলোক গমন করেন।