পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



রামকৃষ্ণ পরমহংস।

 ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দে ২০শে ফেব্রুয়ারি হুগলি জেলার কামারপুকুর গ্রামে ইনি জন্মগ্রহণ করেন। ইঁহার পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় রামোপাসক ছিলেন। রামকৃষ্ণ তাঁহার তৃতীয় বা কনিষ্ঠ পুত্ত্র। বাল্যে ইঁহার নাম ছিল “গদাধর"। বিদ্যালয়ে ইঁহার তাদৃশ লেখাপড়া শিক্ষা হয় নাই। কলিকাতার সন্নিহিত দক্ষিণেশ্বর গ্রামে রাণী রাসমণির স্থাপিত কালীর পুজারি স্বরূপে ইনি নিযুক্ত হন। এই খানেই ইঁহার ধর্ম্মভাবের অপূর্ব্ব স্ফুর্ত্তি দৃষ্ট হয়। ইনি ঈশ্বরকে মাতৃভাবেই দেখিতে লাগিলেন এবং সকল প্রকার ধর্ম্মের মূল অবগত হুইবার মানসে, ইনি কখন মুসলমান বেশধারী, মুসলমান খাদ্যাহারী হইয়া “আল্লার উপাসনা করিতে লাগিলেন; কখনও বা খৃষ্টান ধর্ম্মমন্দিরে যাইয়া ভজনায় যোগ দিতে লাগিলেন; কখনও গোপীবেশে শ্রীকৃষ্ণের প্রেম উপলব্ধি করিবার চেষ্টা করিলেন; আবার কখনও আপনাকে হনুমান কল্পনা করিয়া দাস্যভাবে উপাসনায় প্রবৃত্ত হইলেন। ইনি কি শৈব, কি শাক্ত, কি রামাৎ, কি বৈষ্ণব, কিংবা বৈদান্তিক, ইহার একটীও ছিলেন না; অথচ সবই ছিলেন। সর্ব্বধর্ম্ম সমন্বয়ের ভাব ইঁহারই নিকট হইতে গ্রহণ করিয়া কেশবচন্দ্র সেন নববিধান ধর্ম্মের প্রতিষ্ঠা করেন, এইরূপ কথিত আছে। কামিনী-কাঞ্চন বর্জ্জনই রামকৃষ্ণের নিজ জীবনের এবং ধর্ম্ম অধ্যাপনার মূলমন্ত্র ছিল। অল্প বয়সেই ভার্য্যা সারদা দেবীর সন্মতি লইয়া তাঁহাকে পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। উত্তরকালে যশোধরার ন্যায় তিনি স্বামীর

৮৬