পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৯২
বিদ্যাসাগর।

তাঁহার ছাত্রদিগের কবিতা ও প্রবন্ধ মুদ্রিত হইত। ঈশ্বরচন্দ্র প্রায় ১০ বৎসর নানাস্থানে ঘুরিয়া বহু যত্ন ও পরিশ্রমে ভারতচন্দ্র, রামপ্রসাদ সেন, রাম বসু, হরুঠাকুর, নিতাই দাস প্রভৃতি প্রাচীন কবিগণের জীবন চরিত ও অনেক লুপ্ত কবিতা প্রকাশ করেন। বস্তুতঃ প্রাচীন বঙ্গীর কবিদিগের জীবনবৃত্তান্ত উদ্ধার বিষয়ে ঈশ্বরচন্দ্রই প্রথম ও প্রধান উদ্যোগী। ১২৬৪ সালে ইনি 'সংবাদ প্রভাকর' পত্রে “প্রবোধপ্রভাকর", “হিত প্রভাকর", “বোধেন্দু বিকাশ” নামক তিনখানি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তৎপরে শ্রীমদ্ভাগবতের বাঙ্গালা পদ্যানুবাদ প্রকাশ করিতে আরম্ভ করেন; পরন্তু মঙ্গলাচরণ ও কয়েকটা শ্লোকের অনুবাদ করিয়া মৃত্যুশয্যায় শয়ন করেন। ১২৬৫ সালের ১০ই মাঘ ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সজ্ঞানে গঙ্গালাভ করেন।

 ঈশ্বরচন্দ্রের মৃত্যুর পর তদীয় অনুজ রামচন্দ্র গুপ্ত সংবাদ প্রভাকরের সম্পাদন ভার গ্রহণ করেন। এই সময়ে পূর্বোক্ত মহেশচন্দ্র গভীর দুঃখের সহিত গাহিয়াছিলেন;—

“সাত মেড়াতে জড় হয়ে নষ্ট করলে প্রভাকর।
জন্মে কলম ধরেনি কো, রাম হল এডিটর।
আগা পাছ বাদ দিয়ে শ্যাম হল কমাণ্ডর।

 বাঙ্গালীদিগের মধ্যে ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তই প্রথম কেবল নিজের লেখনীয় উপর নির্ভর করিয়া জীবনযাত্রা নির্বাহ করেন। ইনি বিলক্ষণ অর্থোপার্জ্জন ও সমাজে প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছিলেন। ইনি যেমন অর্থোপার্জ্জন করিতেন, তেমনি তাহার সদ্ব্যয় করিতেন। ইনি মুক্ত পুরুষ ছিলেন; ইঁহার বাড়ীতে সদাব্রত ছিল। অন্নপ্রার্থী হইয়া কেহ কখনও বিমুখ হয় নাই। ইনি খুব উচ্চশ্রেণীর