পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবন কথা।
৬৯৯

কিন্তু বাল্যকাল হইতেই ইঁহার বক্তৃতা-শক্তি জন্মিয়াছিল। ইঁহার নয় বৎসর বয়ঃক্রমকালে ইহাদের বাটীতে একটী বিবাহ-সভায় অন্যান্য বালকগণের সহিত মিখ্যা ইংরাজীতে রামগোপাল বরকে বিদ্রূপ করিতেছিলেন। সে ইংরাজীর কোন অর্থ না থাকিলেও তাহার উচ্চারণ এবং স্বরভঙ্গীতে সভাস্থ সকলে মুগ্ধ হন এবং তাঁহারা রামগোপালকে বলেন যে, ভাল ইংরাজী শিখিলে তিনি একজন উৎকৃষ্ট বক্তা হইতে পরিবেন। এই কথা বালক রামগোপালের হৃদয়ে জগরূক হইয়া রহিল। পিতার অবস্থা সচ্ছল না হইলেও ইনি তাঁহাকে অনুরোধ করিয়া হিন্দু কলেজে প্রবিষ্ট হইলেন। তখন এই কলেজের বেতন পাঁচ টাকা ছিল। সুতরাং পিতা তাহা যোগাইয়া উঠিতে পারিলেন না। কিন্তু এই বালকের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ও অধ্যবসায় দর্শনে কলেজের অধ্যক্ষ ডেভিড হেয়ার ইঁহাকে অবৈতনিক ছাত্র করিয়া লইলেন। রামগোপাল অধিকতর যত্ন ও উৎলাহের সহিত অধ্যয়ন করিতে লাগিলেন। এই সময়ে হেনরী ডিরোজিও নামক কলেজের জনৈক শিক্ষক একটা স্বতন্ত্রশ্রেণী স্থাপনপূর্ব্বক কতকগুলি বুদ্ধিমান্ ছাত্র লইয়া উচ্চ ধরণের শিক্ষা দিতে লাগিলেন। কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রসিককৃষ্ণ মল্লিক, রামগোপাল প্রভৃতি ছাত্রগণ এই শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। তাঁহার শিক্ষায় ছাত্রগণের ইংরাজীতে ব্যুৎপত্তি ও স্বাধীন চিন্তা এবং তর্কশক্তির স্ফূর্ত্তি হইতে লাগিল, কিন্তু ঐ সকল ছাত্র ক্রমেই জাতীয় ধর্ম্ম ও আচার ব্যবহারের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হুইয়া পড়িতে লাগিলেন। এই শ্রেণী হইতেই এদেশে বিলাতি। সুরার প্রচলন আরম্ভ হয়। এই জন্য কলেজের অধ্যক্ষেরা বিরক্ত হইয়া উক্ত শিক্ষককে পদচ্যুত করিতে সংকল্প করেন। ফলে