পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবন-কথা।
৭০১

দেউলিয়া হইয়া পড়ায় ইঁহার এমন অবস্থা হইয়াছিল যে, সমস্ত ঋণ পরিশোধ করিতে হইলে ইঁহাকে সর্ব্বস্বান্ত হইতে হইত। তৎকালে অনেকেই ইঁহাকে বিষয় সম্পত্তি বেনামী করিবার পরামর্শ দেন, কিন্তু রামগোপাল তাঁহাদিগকে স্পষ্টবাক্যে বলেন, ঋণ পরিশোধের জন্য যদি পরিধেয় বস্ত্রখানিও বিক্রয় করিতে হয়, তাহাও করিব। সৌভাগ্যবশতঃ সেবার ইঁহাকে এক পয়সাও লোকসান দিতে হয় নাই। বাজারে ইঁহার এমনই নামডাক হইয়াছিল যে, ইঁহার মুখের কথায় লোকে লক্ষ টাকা পর্য্যন্ত কর্জ দিতে কুষ্ঠিত হইত না। লোকে বলিত, পূর্ব্বের সূর্য্য পশ্চিমে উদয় হইলেও রামগোপাল ঠকাইবে না।

 বক্তৃতা ও লেখনী সঞ্চালন দ্বারা রামগোপাল দেশের অনেক কাজ করিয়া গিয়াছেন। ইঁহার কথায় গবর্ণমেণ্ট আইনের সংশোধন করেন। গবর্ণমেণ্ট নিমতলার শ্মশান ঘাট কলিকাতার আরও দক্ষিণে লইয়া যাইবার জন্য উদ্যত হইলে রামগোপালের বাকপটুতাগুণেই উক্ত কার্য্য স্থগিত হয়। ১৮৪৯ খৃষ্টাব্দে ইহাকে কলিকাতা ছোট আদালতে দ্বিতীয় জজের পদ গ্রহণ করিবার জন্য অনুরোধ করা হয়। ইনি এ পদ গ্রহণ করিতে অস্বীকার করেন। মফঃস্বলের ইংরাজগণের বিচার কলিকাতা মুপ্রিম কোর্টেই হইবার নিয়ম ছিল। কোম্পানি যখন উহাদিগকে দেওয়ানী মোকদ্দমা সম্বন্ধে দেশীয় আদালতের বিচারাধীন করিবার প্রস্তাব করেন, তখন ইংরেজের ঐ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ঘোরতর আন্দোলন উথপিত করে। ঐ আন্দোলনের প্রতিবাদ উপলক্ষে রামগোপাল বিলক্ষণ বক্তৃতা ও যুক্তিপ্রয়োগ শক্তি দেখাইয়াছিলেন। বেথুন স্কুল স্থাপিত হইলে যে সকল বাঙ্গালী তাঁহাদের কন্যাগণকে উক্ত