পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিক্ষার অবস্থা।
৫৩

জন নাই। যাহাতে পাশ্চাত্য সাহিত্য, বিজ্ঞানপ্রভৃতির শিক্ষাপ্রসারের জন্য স্বতন্ত্র কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়, তদর্থে কর্ত্তৃপক্ষের যত্নশীল হওয়া কর্ত্তব্য। টোলের শিক্ষা অব্যাহত রাখিবার পরামর্শ দেওয়া সাধু কল্পনা সন্দেহ নাই; তবে পাশ্চাত্যশিক্ষাপ্রসারের পরামর্শ দিয়া তিনি ভবিষ্যদ্দর্শিতার পরিচয় দেন নাই। তাৎকালিক ইংরেজী শিক্ষার ফলাফল আলোচনা করিলে আমাদের এ কথার সার্থকতা হৃদয়ঙ্গম হইবে।

 হিন্দু কলেজের প্রসাদে তখন কলিকাতা সহরে উচ্ছৃঙ্খল ইংরেজী শিক্ষার আবর্তে পড়িয়া অনেক হিন্দুসন্তান বিপথগামী ও সমাজদ্রোহী হইয়া পড়িয়াছিলেন। আকস্মিক ইংরেজী শিক্ষার প্রবাহ হিন্দুসমাজকে তখন অনেকটা উদ্বেলিত করিয়াছিল। সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হইবার সাত বৎসর পূর্ব্বে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল।

 ঈশ্বরচন্দ্র যখন সংস্কৃত কলেজে প্রবেশ করেন, তখন হিন্দু কলেজের অনেক ছাত্র বিজাতীয় বিদেশীয় শিক্ষকের বিজাতীয় শিক্ষাভাব-প্রণোদনে এবং ইংরেজী শিক্ষার বিষময় ফলে বিজাতীয় ভাবাপন্ন হুইয়। হিন্দুসমাজে একটা বিষম বিপ্লব ঘটাইবার উপক্রম করিয়াছিলেন। তাহাদের পূর্ব্বে যাঁহার কলেজের শিক্ষা সমাপ্ত করিয়া সংসারক্ষেত্রে বিচরণ করিতেছিলেন, তাঁঁহাদের অনেকের অসদাদর্শে হিন্দু কলেজের তৎকালিক অনেক ছাত্রের মতি-গতি বিকৃত হইয়াছিল। প্রসিদ্ধ অধ্যাপক রাজনারায়ণ বসু হিন্দু কলেজের ছাত্র ছিলেন। তিনি স্বরচিত চরিতে যে আত্মকথা লিখিয়াছেন, তাহা আমাদের এই মন্তব্যের একটী প্রমাণ হইবে। তিনি লিখিয়াছেন—