পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
বিদ্যাসাগর।

ব্যুহবেষ্টনে আবদ্ধ ছিলেন। এক দিকে হিন্দু কলেজের উন্মদিনী শিক্ষা, অপর দিকে মিশনরী কলেজের মোহিনী মায়া; তদুপরি শক্তিশালী সাহেব সিবিলিয়নদের গাঢ় ঘনিষ্ঠতা। যে বৎসর ঈশ্বরচন্দ্র সংস্কৃত কলেজে প্রবেশ করেন, তাহার পর বৎসরে পাদরী ডফ সাহেবের স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮১৭ খৃষ্টাব্দে খৃষ্টানী স্কুল “বিসস্প কলেজ” প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। ইংরেজী শিক্ষার অপ্রতিহত ঘাত প্রতিঘাতে হৃদয়বান, মনস্বী ও তেজস্ব ঈশ্বরচন্দ্র ও বিচলিত হইয়াছিলেন। অবিমিশ্র সংস্কৃত শিক্ষা লাভ করিয়া ও ঈশ্বরচন্দ্র ভাবিছিলেন, ইংরেজ না শিখিলে বর্ত্তমান যুগে সংসারের শ্রীবৃদ্ধিসাধন দুঃসাধ্য। তাই তিনিও সংস্কৃতপাঠসমাপনান্তে কার্যাবস্থায় ইংরেজী শিক্ষায় প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। যখন ফোট উইলিয়ম কলেজে কাজ করেন, তখন ঈশ্বরচন্দ্রের প্রতিভাদর্শনে প্রীত হইয়া অধ্যক্ষ মেজর মার্শেল সাহেব বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র, তুমি ইংরেজী পড়িতে আরম্ভ কর। তাহাতে তুমি জগতে বিশেষ যশস্বী হইবে। তাহার পর বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রথমতঃ ডাঃ নীলমাধব মুখোপাধ্যায়ের নিকট ইংরেজী শিক্ষা করিতে আরম্ভ করেন, তাহার পর ডাঃ দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় (বিখ্যাত বাগী শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় মহাশয়ের পিতা) মহাশয়ের নিকট শিক্ষা লাভ করেন; পরে উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য শিক্ষক নিযুক্ত করিয়া তিনি ইংরেজী ভাষায় বিশেষ বুৎপন্ন হইয়াছিলেন।

 সংস্কৃত শিক্ষার ফলেই হউক,আর তাঁহার অলৌকিক দৃঢ়চিত্ততা ও আত্মসম্মানবোধের জন্য হউক, তিনি সর্ব্বতোভাবে দেশীয় ভাব সংরক্ষণে সমর্থ হইয়াছিলেন এবং ইংরেজী শিক্ষার তাৎকালীন ফল কতকটা তাঁহাতেও সংক্রমিত হইয়াছিল কি না, সে সম্বন্ধে