পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
বিদ্যাসাগর।

রাম শাস্ত্রী,— অলঙ্কার; জয়গোপাল তর্কালঙ্কার,—সাহিত্য; গঙ্গাধর তর্কবাগীশ,—ব্যাকরণ; হরিপ্রসাদ তর্কালঙ্কার,—ঐ; হরনাথ তর্কভূষণ, -ঐ; যোগধ্যান মিশ্র,—জ্যোতিষ।

 ঈশ্বরচন্দ্র কলেজে ভর্তি হইলে পিতা ঠাকুরদাস প্রত্যহ নয় টার সময় ঈশ্বরচন্দ্রকে কলেজে দিয়া আসিতেন; আবার স্বয়ং অপরাহ্ন চারিটার সময় লইয়া যাইতেন। ছয় মাস কাল এইরূপ করিতে হইয়াছিল। তাহার পর ঈশ্বরচন্দ্র স্বয়ং কলেজে যাতায়াত করিতেন। ছয় মাস পরে ঈশ্বরচন্দ্র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয পাঁচ টাকা বৃত্তি পান।

 ঈশ্বরচন্দ্র বাল্যকালে “বাঁটুল” ছিলেন। ছাতা মাথায় দিয়া যাইলে মনে হইত, যেন একটা ছাতা যাইতেছে। তাঁহাব মাথাটা দেহের অনুপাতে একটু বড় ছিল। এই জন্য বালকেরা তাহাকে ‘যশুরে কৈ' বলিয়া ক্ষেপাইত। বালক ঈশ্বরচন্দ্র সমবয়স্কদের বিদ্রুপোক্তিতে বড় বিরক্ত হইতেন। অনেক সমষ তিনি রাগে রক্তমুখ হইয়া উঠতেন; কিন্তু কথা কহিতে গিয়া আরও হাস্যম্পদ হইয়া পড়িতেন। তিনি তখন বড় 'তোতলা’ ছিলেন। সেই জন্য সহজে সকল কথা উচ্চারিত হইত না এবং এক একটা কথা উচ্চারণ করিতে কাল-বিলম্ব হইত; সুতরাং তাঁহাতে সমবয়স্ক বালকেরা হাসির মাত্র চড়াইয়া বিদ্রুপের মাত্রা ও বাড়াইয়া দিত। ক্রমে যশুরে কৈ’ নামটা “কশুরে যৈ’ শব্দে পরিণত হইয়াছিল। বালকেরা তখন কি বুঝিত,—এই মাথা-মোটা 'যশুরে কৈ’ কালে কত বড় লোক হইবে? তাহারা কি তখন বুঝিত, মাথা অপেক্ষা বালক ঈশ্বরচন্দের হৃদয়টা কত বৃহৎ?

 বালক বিদ্যাসাগব কলেজে যাহা শিখিয়া আসিতেন, রাত্রি-