পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রহার-পীড়ন।
৬৩

অনেক স্বাভাবিক বুদ্ধিমান বালক বিভিন্ন মূর্ত্তি ধারণ করিয়াছে। আমাদের এক জন আত্মীয়ের একটা বুদ্ধিমান পুত্র ছিল। পিতা ভাবিতেন, নিয়ত কঠোর শাসনে রাখিতে পারিলে, পুত্রের বিদ্যাবুদ্ধির মাত্রা বাড়িবে। এই বিশ্বাসে পুত্রের সামানয় দোষ দেখিলেই পিতা পুত্রের প্রতি কঠোর প্রচার-পীড়নের ব্যবস্থা করিতেন। ফলে পুত্রের হৃদয়ে পিতৃশাসনের বিভীষিকা এতদূর ঘনীভূত হইয়া দাড়াইয়াছিল যে, পুত্র পিতাকে দেখিলেই দূরে পলায়ন করিত। তখন বহু সাধ্য-সাধনায়ও তাহাকে সমীপবর্ত্তী করা দুঃসাধ্য হইত; সুতরাং যাহার জন্য শাসন, তাহাই ঘুচিয়া গেল। এইরূপ শাসনবিভীষিকার্য পুত্র্রের ভবিষ্যৎ জীবনের উন্নতি-পথ রুদ্ধ হইয়া গিয়াছিল। প্রহার-পীড়ন-ফলে বুদ্ধিমান ঈশ্বরচন্দ্রের অবশ্য সেরূপ হয় নাই। স্বর্গীয় ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের জীবনেও এরূপ শাসন-পীড়নের পরিচয় পাওয়া যায়। তাঁহার পিতাও ঠাকুরদাসের ন্যায় কঠোর শাসনের পক্ষপাতী ছিলেন। আবার ইহাও দেখা যায়, এক জনের বুদ্ধিহীন পুত্র পিতার প্রচার পীড়নেও নির্বুদ্ধিতার সীমা অতিক্রম করিতে না পারিয়া অধ:পাতে গিয়াছে; অপর বুদ্ধিমান পুত্র অক্ষত-পৃষ্ঠে জীবনের পথ উজ্জ্বল করিয়াছে। এ সব দৃষ্টান্তের আলেচনায় অদৃষ্টবাদিত্বের পক্ষপাতিত্ব আসিয়া পড়ে না কি?

 ব্যকরণ শ্রেণীতে বালক ঈশ্ববচন্দ্র অন্য ছাত্র অপেক্ষা অধ্যাপকের প্রীতিপাত্র হইয়াছিলেন। অন্যান্য ছাত্রাপেক্ষা ব্যাকরণ বিদ্যায় তাঁহার অসম্ভাবিত ব্যুৎপত্তি দেখিয়া অধ্যাপক তাঁহার উপর বড় সস্তুষ্ট থাকিতেন। তিনি পাঠান্তে ঈশ্বরচন্দ্রকে আপনার নিকট বসাইয়া উদ্ভট শ্লোক শিখাইতেন। পিতা ও অধ্যাপকের