পাতা:বিদ্যাসুন্দর-রামপ্রসাদ সেন.djvu/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 ভূমিক। জগত ব্যতীত আর বি ছু চাই না । তাহার পর আমাদের মন সংসার সমুদ্রে পড়িয়া ৫।বৃত্তি আবর্তে বড়ই হাবুডুবু খাইতে দেখিলে সুখী হই। তাই সাধারণ লোক কাব্যে এইরূপ স্বভাব বর্ণনা ও এই সকল সাধারণ প্রবৃত্তির চিত্র ব্ল্যতীত অধিক কিছু চায় না । যিনি অপেক্ষাকৃত ভাল লোক, র্যাহার চিত্তরঞ্জিনা । বৃত্তি ও অধিকতর সার্জত, তিনি কাব্যে বড় জোর সদৃত্তির চিত্ৰ দেখিতে চাহেন। কাব্য মধ্যে কল্পনার লীলা, আদর্শ চরিত্রে বণন, উচ্চতর মনোবৃত্তির কার্য্যপ্রণালীর চিত্র প্রভূতি আদশ কাল্পনিক বিষয়ের সমাবেশ দেখিতে ভাল বাসেন। এই রূপ কাব্যকেই তাছার প্রকৃত কাব্য বলেন । কিন্তু যিনি জ্ঞানী, তাহার নিকট বাহ-জগতের বৈচিত্র্য, দুর হইতে থাকে। সকল তিনি সমান দৃষ্টিতে দেখিতে শিখেন। এই বৈচিত্রের প্রকৃত তত্ত্ব অন্বেষণ করিয়৷ সকলের মূলে এক মুল সত্ব আছে দেখিতে পান । কাব্যেও ইহার এই তত্ত্ব দেখিতে চান। ইহাদের মতে প্রকৃত কাব্যের এই সত্যই প্রধাণ ভিত্তি হওয়া আবশ্যক । তাই ভক্তিরস, ধৰ্ম্মকথা, জ্ঞানের কথা, ঈশ্বরন্থগুহাত লোকের কথা, ইহঁদের মতে বাব্যের প্রধান অঙ্গ হওয়া উচিত। ষে সকল অতীন্দ্রিয় বিষয় কেবল জ্ঞানীর জ্ঞানচক্ষেই প্রতিভাত হয়, ই হাদের মতে প্রকৃত কাব্যে সেই সকল বিষয় বর্ণনার প্রত মুল লক্ষ থাকা উচিত । কোন খ্যাত-নাম লেখক বলিয়াছেন, “সামান্য কবিত। ( স্বভাব) বর্ণনাময়ী ; উচ্চতর কবিতা ( আদশ ) কল্পনাময়ী ; এবং উচ্চতম কবিতা ( আধ্যাত্মিক ) রহস্যময়ী।” সুতরাং যাহাতে সাধারণ লোক সন্তুষ্ট হয়--উচ্চদরের লোক তাহাতে সুখ পান না-- আবার যাহাতে জ্ঞানীগণ আননা উপভোগ করেন, তাহাতে সাধারণ লোক অকৃষ্ট ইস না । এই জন্য সাধারণ লোকের কাছে কবিরঞ্জন বিদ্যাসুন্দর অপেক্ষা ভারতের বিদ্যাসুন্দর অধিক সাদৃত—আর জ্ঞানী লোকের কাছে ভারতের বিদ্যাসুন্দর অপেক্ষা কবিরঞ্জন বিদ্যাসুন্দর অধিক অাদৃত ।