পাতা:বিদ্যাসুন্দর-রামপ্রসাদ সেন.djvu/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবনবৃত্তান্ত । ›ጫ একদা রামপ্রসাদ কাশী গিয়াছিলেন । তিনি তথায় সমুদায় দেবতা দেখিলেন–কিন্তু বেণীমাধব দর্শন করেন নাই। তথন অন্নপূর্ণ বেণীমাধৰৰূপে স্বপ্নে রামপ্রসাদকে দেখা দিলেন । ঘুম ভাঙ্গিলেই রামপ্রসাদ গাহিলেন, “কালী হলি মা রাসবিহারী। নটোবর বেশে বৃন্দালনে ॥” দেবী অন্নপূর্ণার আদেশে তাহাকে গান শুনাইতে কাশী যাইতে যাইতে, পথিমধ্যে স্বপ্নে অন্নপূর্ণাকে গান শুনাইবার আদেশ পাইয়া তৎক্ষণাৎ যে গান গাইয়াছিলেন, তাহ আমরা পূর্বেই বলিয়াছি। ইহা হইতেই স্পষ্টই দেথা যায় যে,রামপ্রসাদ অসংথ্য সঙ্গীত রচনা করিয়া গিয়াছেন । তিনি কখন স্বরচিত সঙ্গীত কাগজে কলমে লিখিয়া রাখিতেন না—আর তখন বোধ হয় সেরূপ রীতিও ছিল না । বিশেষ তিনি বোধ হয়, এক সঙ্গীত কখন দুইবার গাহিতেন না। কারণ তিনি শক্তিসাধনার জন্য প্রত্যহ নুতন সঙ্গীত রচনা করিতেন। রচিত সঙ্গীত কেমন হইল, তাহ। তাহার ভাবিয়া দেখিবারও অবসর ছিল না । ষে সকল সঙ্গীত অন্য লোকে তাহার নিকট শুনিয়া ভাল বোধে অভ্যাস করিত, তাহাই ক্রমে লোক পরম্পরায় প্রচলিত হইয়াছে। বাকী সমস্ত সঙ্গীতই আর পাইবার উপায় নাই । বোধ হয় যে, তাহার সঙ্গীতের এক সহস্রাংশও এখন পাওরা ছুক্ষর, আবার যাহা পাওরা যায়, তাহারও পাঠে অনেক ব্যতিক্রম হইয়া গিয়াছে। প্রসাদের একটা গানে “লাক , উকীল করেছি খাড়া” এই কথার উল্লেখ আছে । ইহাতে অনেকেই অনুমান করেন যে, তিনি লক্ষ গীত রচনা করিয়াছিলেন । বাস্তবিক তিনি যেরূপ শিশুকাল হইতেই সাধনা ও সঙ্গীত রচনা আরম্ভ করিয়াছিলেন, ও যেরূপ বৃদ্ধ বয়স পর্য্যস্ত জীবিত ছিলেন ৰোধ হয়, তাহাতে যে তিনি যে লক্ষ সঙ্গীত রচনা করিয়াছিলেন, তাহ আশ্চৰ্য্য নহে ।