o ਫ਼ਟਵ নিরর্থক ছিড়িয়া এদিকে ওদিকে ছুড়িয়া ফেলিতে লাগিল। দেখিয়া দিগম্ববীর গা জ্বালা করিতে লাগিল। নারায়ণী বাড়ীতে নাই, তিনি আর সহ্য করিতে না পারিয়া বলিলেন, তোমার জন্য ত বাছা, পাকা পিয়ারা দাতে কাটুবার যো নেই, কঁচাগুলো নষ্ট ক’রে কি হ’চ্চে ? রাম কোন দিনই তাহার কথা সহিতে পারিত না । বিশেষ, এইমাত্র নেত্যর কাছে মারা খাইবার কারণ জানিতে পারিয়া রাগে ফুলিতেছিল, গাছের উপর হইতে চেচাইয়া বলিল, বেশ ক’বৃচি-বুড়ি ! এই বিশেষণটা দিগম্বরী সব চেয়ে অপছন্দ করিতেন, মুখ বিকৃত করিয়া বলিলেন, বুড়ি ! বেশ ক’চ্চ ! আচ্ছা, আসুক সে -যেমন কুকুর, তেমনি মুগুর হওয়া চাই তা! কি বেহায়া ছেলে বাবা!-মার খেয়ে পিঠের চামড় উঠে গেল, তবু লজ্জা হ’ল না! রাম উপর হইতে বলিল, ডাইনি বুড়ি ! ডাইনি বুড়ি! যত বড় মুখ নয়, তত বড় কথা! পাজি হারামজাদা, নাবী ব’লচি! রাম বলিল, নাবিব কেন ? তোমার বাবার গাছ ? দিগম্বরী ক্ষেপিয়া উঠিলেন, চীৎকার করিয়া বলিলেন, আঁ্যা-বাপ। তুললি ? শুনলি নেত্য, শুনলি ? ঠিক এই সময় নারায়ণী ঘাট হইতে আসিয়া পড়িলেন। গাছের উপর দৃষ্টি পড়িতেই বলিলেন, ভাত খেয়ে ইস্কুলে গেলিনি ? গাছে চ’ড়েছিল যে। রাম ভাবিয়া রাখিয়াছিল, গাছের উপর হইতে দূরে বৌদিকে আসিতে দেখিয়াই সে নামিয়া পলাইবে । কিন্তু ঝগড়ায় ব্যস্ত থাকায় পথের দিকে নজর করে নাই। বৌদিদি একেবারে উঠানে আসিয়া ঐদাড়াইয়াছেন । সে ভয়ে বলিল, পিয়ারা খাচ্চি । তা ত খাচ্ছিস-ইস্কুলে গেলিনে ?
পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০৮
অবয়ব