বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

one ক্লামেৱ সুমভিচ পুড়ে আঙরা উঠবে যে! ঐ হাড়িতে কি অত চাল ধরে, না, ঐটুকু জলের কৰ্ম্ম । আবার রাধিয়ে বলে দেমাক আছে! রাধি বটে আমরা, কিন্তু দেমাক ক’ত্তে জানিনে! ভাত রাধব, তা, এমন জল দেব, আর দেখতে হবে না-চোখ বুজে সেদ্ধ হবে। কই রাধুক দিকি আমার সঙ্গে । লোক খেয়ে কারটা ভাল বলে দেখি । নারায়ণী মুখ ফিরাইয়া রহিলেন। নেত্য কাছে ছিল, সে বলিল, দিদিমার এক কথা । ও কি কোন দিন এক ঘটি জল গড়িয়ে খেয়েছে, যে আজ রোধে খাবে ? সে অনেক দিনের দাসী, এসব ব্যাপার তাহার ভাল লাগিতেছিল ନୀ ! মায়ের দেখাদেখি সুরধুনীও মাঝে মাঝে গিয়া বেড়ার ফাক দিয়া দেখিতেছিল। ঘণ্টা-খানেক পরে ছুটিয়া আসিয়া দিদির হাত ধরিয়া টানাটানি করিতে লাগিল-ও দিদি, দেখবে এস, রামদাদা-মা গো ! একেবারে কঁচা ভাতগুলো শুধু খাচ্চে। কিছু নেই দিদি-একেবারে শুধু ভাত। আচ্ছা দিদি, কঁচা ভাতে পেট কামড়াবে না ? নারায়ণী তাহার হাত ছুড়িয়া ফেলিয়া দিয়া উঠিয়া গিয়া বিছানার উপর শুইয়া পড়িলেন। সে যে কত বড় দুঃখ, কত বড় ক্ষুধার তাড়নে এইগুলা খাইতে বসিয়াছে, সে কথা তঁহার অগোচর রহিল না ! দুপুর-বেলা শ্যামলালের খাওয়া হইয়া গেল, দিগম্বরী ডাকাডাকি করিতে লাগিলেন, যা পারিস, দুটি খেয়ে নে নারাণি ! ওরা তাড়সে জ্বরের মত হয়েছে-ওতে খাওয়া চলে। আমি বলচি, ক্ষেতি হবে না। নারায়ণী মোট চাদরটা আগাগোড়া মুড়ি দিয়া ভাল করিয়া শুইয়া বলিলেন, আমাকে বিরক্ত ক’রো না মা, তোমরা খাও গে। দিগম্বরী বেলিলেন, ভাত না খাস, দুখানা রুটি ক’রে দি-না হয়