*ss ਵo বিন্দু কহিল, পণ্ডিতমশাই এসেছিলেন, তিনি মাসে দশটাকা ক’রে পেলে পাঠশালা তুলে আনবেন। আমি বলি, আমার সুদের জমা টাকা থেকে যেন সব খরচ দেওয়া হয়। যাদব সন্তুষ্ট হইয়া বলিলেন, বেশ ত মা, কালই আমি লোক লাগিয়ে দেব, গঙ্গারাম। এইখানেই যদি তাব পাঠশালা তুলে আনে, সে ত ভাল কথাই। ভালুরের হুকুম পাইয়া বিন্দুর রাগ পড়িযা গেল” সে হাসি-মুখে রান্নাঘরে ঢুকিয়া দেখিল, অন্নপূর্ণা মুখ ভার করিয বসিযা আছেন এবং কাছে বসিয়া কদম হাত-মুখ নাড়িযা কি যেন ব্যাখ্যা করিতেছে। বিন্দুকে ঢুকিতে দেখিয়াই সে পাংশুমুখে 'ওমা এই যে— বলিয়াই বক্তব্য শেষ করিয়া ফেলিল। বিন্দু বুঝিল, তাহার কথাই হইতেছিল, সামনে আসিয়া বলিল, ও মা কি, তাই বল না। ভয়ে কদমের গলা কাঠ হইয়া গিয়াছিল ; সে ঢোক গিলিয়া বলিল, না দিদি, এই কি না-বডমা বললেন কি না--এই ধর না, কেনবিন্দু রুক্ষম্বরে বলিল, ধরেচি-তুষ্ট কাজ করা গে যা। কদম দ্বিরুক্তি না করিয়া উঠিয়া গিয়া বাঁচিল । তখন বিন্দু অন্নপূর্ণাকে কহিল, বড়গিল্পীর পরামর্শদাতাগুলি বেশ। বঠ ঠাকুরকে ব'লে। ওদের মাইনে বাডিয়ে দেওয়া উচিত। বিন্দু খুসি থাকিলে অন্নপূর্ণাকে দিদি বলিত, রাগিলে বড়গিল্পী বলিত। অন্নপূর্ণ জ্বলিয়া উঠিয়া বলিলেন, যা না, বল গে না-বঠ ঠাকুর আমার মাথাটা কেটে নেবে। আর বঠ ঠাকুরও তেমনি। সে তক্ষুনি সুরু করবে, কি মা! কি বলাচ মা, ঠিক কথা মা!-ঢের ঢের বরাত দেখোঁচি ছোটবৌ, কিন্তু তোর মত দেখি নি। কি কপাল নিয়েই জন্মেছিলি, মাইরি, বাড়ী-মৃদ্ধ সবাই যেন ভয়ে জড়সড়!
পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১২
অবয়ব