পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

83e বাবে, তা সইতে পাবুব না।--তার চেয়ে একেবারে যাক। কিন্তু --তামার কি অস্পৰ্দ্ধা ! শেয-কথাটা অন্নপূর্ণাকে তীক্ষ্মভাবে বিবিল, তথাপি তিনি নিরুত্তরে বসিয়া রহিলেন। কিন্তু বিন্দু যত বকিতেছে, তাহার ক্ৰোধ উত্তরোভর ততই বাড়িতেছিল। সে পুনরায় চেচাইয়। বলিল, সব কথায় তুমি ন্যাকা সেজে বল, এইবারটি মাপ কর, কিন্তু দোষ তার তত নয়, যত তােমার। তোমাকে আমি মাপ কবৃব না। বাটীর দাসী চাকরেরাও আড়ালে দাড়াইয়া শুনিতেছিল। অন্নপূর্ণর আর সহ্য হইল না,তিনি বলিলেন, কি কাবুবি-ফাসি দিবি ? বহ্নিতে আহুতি পড়িল, বিন্দু বারুদের মত জ্বলিয়া উঠিয়া বলিল, সেই তোমার উপযুক্ত শান্তি । নিজের ছেলেকে দুটো টাকা দিযেছি, এই ত অপরাধ ? কি কথায় কি কথা আসিয়া পড়িল, বিন্দু আসল কথা ভুলিয়া বলিয়া বসিল, তাই বা দেবে কেন ? নষ্ট করবার টাকা আসে কোথা থেকে ? অন্নপূর্ণ বলিলেন, টাকা তুই নষ্ট করিস নে ? আমি করি আমার টাকা, তুমি নষ্ট কর কার টাকা শুনি ? অন্নপূর্ণা এবার ভয়ঙ্কর ক্রুদ্ধ হইয়া উঠিলেন। তিনি নিঃস্ব-ঘরের মেয়ে ছিলেন ; মনে করিলেন, বিন্দু সেই ইঙ্গিতই করিয়াছে। দাড়াইয়া উঠিয়া বলিলেন, তুমি না হয় মন্ত বড়লোকের মেয়ে, কিন্তু তাই ব’লে আর কেউ ষে দুটো টাকাও দিতে পারে না, সে অহঙ্কার করিস নে । বিন্দু বলিল, সে অহঙ্কার আমি করি নে, কিন্তু তুমিও ভেবে দেখো একটা পয়সাও দিতে গেলে তুমি কার পয়সা দাও। অন্নপূর্ণা চেচাইয়া বলিলেন, কার পয়সা দিই? তোর যা মুখে আগে তাই বলিস ? যা, দূর হয়ে যা সামনে থেকে।