পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਛcਫ਼ 8 ভৈরব বলিল, হেবোকে দিয়ে বাবু বাতি পরিষ্কার করাচ্চেন। বিন্দু চোখ তুলিয়া বলিল, ফেবু মুখের সামনে জবাব করে! ভৈরব সে চাহনির সুমুখ হইতে ছুটিয়া পলাইল।। কদমকে পাঠাইয়া দিয়া বিন্দু বার-দুই এ-ঘর ও-ঘর করিয়া রান্নাঘরে আসিয়া ঢুকিল। বামুনঠাকরুণ এক বসিয়া ব্লাধিতেছিল। বিন্দু একপাশে বসিয়া পড়িয়া বলিল, আচ্ছা মেয়ে, তোমাকেই সাক্ষী মানচি-সত্যি কথা বল মেয়ে, কার দোষ বেশি ? পাচিক বুঝিতে পারিল না, বলিল, কিসের মা ? বিন্দু বলিল, সেদিনের কথা গো! কি বলেছিলুম। আমি ? শুধু বলেছিলুম, দিদি, অমূল্যকে এর মধ্যে টাকা দিয়েছ ? কে না জানে ছেলেদের হাতে টাকা-কড়ি দিতে নেই। বললেই তা হ’ত, অমূল্য কান্নাকাটি করেছিল, দিযেছি, চুকে যেত। এতে, এত কথাই বা ওঠে কেন, আর এমন দিব্যি-দিলেশাই বা হয় কেন ? পাচটা ঘটিবাটি একসঙ্গে থাকলে ঠেকাঠেকি লাগে, এ ত মানুষ ? তাই ব’লে এত বড় দিব্যি! ঐ একটি বংশধর-তার নাম ক’রে দিব্যি ? আমি বলচি মেয়ে তোমাকে, ইহজন্মে। আমি আর ওর মুখ দেখব না। শত্রুর দিকে ফিরে চাইব। ত ওর দিকে চোখ ফেরাব না । বামুনমেয়ে স্বভাবত অল্পভাষিণী, সে কি বলিবে বুঝিতে না পারিয়া মৌন হইয়া রহিল। বিন্দুর দুই চােখ অশ্রীপূর্ণ হইয়া উঠিল। তাড়াতাড়ি মুছিয়া ফেলিয়া ভাঙা গলায় পুনরায় বলিল, রাগের মাথায় কে দিবি না। করে মেয়ে ? তাই বলে জলস্পর্শ কাবুলে না! ছেলেটাকে পৰ্যন্ত আসতে দিলে না! এইগুলো কি বড়র মত কাজ ? হাজার হোক আমি ছোট, দ্ধি কম, যদি তার পেটের মেয়ে হাতুম, কি কবুত তা হলে ? আমি তেমনি ওর নাম কখন মুখে আনিব না, তা তোমরা দেখো!