পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਵਿਛoਫ রাম চুপ করিয়া রহিল। নারায়ণী বলিলেন, বল না কি ব’লেছিস তাকে ? বলব না। নৃত্যকালী ঘরে ঢুকিয়া সংবাদ দিল—ডাক্তারবাবু আস্চেন। “নারায়ণী মোট চাদরটা টানিয়া লইয়া পাশ ফিরিয়া শুইলেন । রাম ছুটিয়া পলাইয়া গেল। অনতিকাল পরেই ডাক্তার লইয়া শ্যামলাল ঘরে এটুকিলেন। ডাক্তার কৰ্ত্তব্যকৰ্ম্ম সম্পন্ন করিয়া, পরিশেষে নারায়ণীকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, বৌমা, জ্বর সারা না। সারা কি ডাক্তারের হাতে ? তোমার দেওরটি ত আমাকে দুটি দিনের সময় দিয়েছে। এর মধ্যে সারে ভাল, না সারে ত আমার ঘরে দোরে আগুন ধরিয়ে দেবে। নারায়ণী লজ্জায় মরিয়া গিয়া বলিলেন, ওর ঐ রকম কথা, আপনি কোন ভয় করবেন না। ডাক্তার বলিলেন, লোকে বলে ওর একটি দল আছে! তাদের যে কথা, সেই কাজ! তাতেই বড় শঙ্কা হয় মা! আমরা ওষুধ দিতে পারি, প্ৰাণ দিতে পারি। নে । নারায়ণী চুপ করিয়া বলিলেন, ও, ছোড়া একদিন জেলে যাবে, তা জানি, কিন্তু ঐ সঙ্গে আমাকেও না যেতে হয়, তাই ভাবি । আজ নীলমণি শোবার ঘরের সিন্দুক খুলিয়া আসল কুইনিন এবং টাটকা ঔষধ আনিয়াছিলেন, তাহাই ব্যবস্থা করিয়া ফিরিবার সময় শ্যামলাল চার টাকা ভিজিট দিতে গেলে তিনি জিভ কাটিয়া বলিলেন, সৰ্ব্বনাশ ! আমার ভিজিট ত এক টাকা । তার বেশি। আমি কোন মতেই নিতে পারব না-ও অভ্যাস আমার নেই! শ্যামবাৰু, টাকা দুদিনের, কিন্তু ধৰ্ম্মটা যে চিরদিনের।