পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বল্লামেৱ সুমভি ও-ধারের বারান্দায় পা ঝুলাইয়া খুটি ঠেস দিয়া রাম চুপ করিয়া বসিয়া আছে। নৃত্যকালী বলিল, ইস্কুলের সময় হয় নি। ছোটবাবু? মা ডাকচোন। রাম জবাব দিল না। যেন শুনিতেই পায় নাই, এইভাবে বসিয়া রহিল। নৃত্য সামনে আসিয়া বলিল, মা, চান ক’রে খেয়ে নিতে বলচেন। রাম চোখ রাঙাইয়া গৰ্জিয়া উঠিল, তুই দূর হ! কিন্তু মা কি বলেচেন শুনতে পেয়েচ ? না, পাই নি। আমি নাব না, খাদ না-কিছু করব না।--তুই যা। আমি গিয়ে বলচি তাকে, বলিয়া নৃত্যকালী ফিরিতে উন্থত হইল। রাম তৎক্ষণাৎ উঠিয়া খিড়কির এদো-পুকুরে ডুব দিয়া আসিয়া ভিজা মাথায় ভিজা কাপড়ে বসিয়া রহিল। নারায়ণী খবর পাইয়া ব্যাকুল হইয়া ছুটিয়া আসিলেন—ওরে ও ভূত ! ও কি করলি ? ও ডোবাটায় ভায়ে কেউ পা ধোয় না। তুই স্বচ্ছন্দে ডুব দিয়ে এলি ? তিনি আঁচল দিয়া বেশ করিযী। তাহার মাথা মুছাইয়া দিয়া, কাপড় ছাড়াইয়া ঘরে আসিয়া ভাত বাড়িয়া দিলেন। রাম বাড়া-ভাতের সুমুখে গোজ হইয়া বসিয়া রহিল। নারায়ণী তাহার ভাবটা বুঝিয়া কাছে আসিয়া মাথায় হাত দিয়া বলিলেন, লক্ষ্মী ভাইটি, এ-বেলা তুই আপনিঃখা, রাত্তিরে তখন আমি খাইয়ে দেব। চেয়ে দেখা এখনো আমার রা য় নি-লক্ষ্মীটি খাও। রাম তখন ভাত খাইয়া জামা পরিয়া ই ৩-৪ চলিয়া গেল। নৃত্যকালী কহিল, তোমার জন্যই ওর সব রকম বদ অভ্যাসহ’চ্ছে মা ! অত বড় ছেলেকে কোলে বসিয়ে খাইয়ে দেওয়া কি ! একটু রাগ করলেই খাইয়ে দিতে হবে-ও আবার কি কথা ! নারায়ণী একটু হাসিয়া বলিলেন, না হ’লে খায় না যে। রাত্তিরের