পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

/ਬੁਛ cਟਫ਼ কি উপায়ে যে কি করা যায়, ইহা কোনমতে স্থির করিতে পারিল না। ফিরিয়া গিয়া তাহাকে খাইবার জন্য অনুরোধ করিতে তাহার লজ করিতেও লাগিল। তা ছাড়া দাদা খায় নি! অনুরোধ করিলেই বা কি হইবে! সে কেঁচড় হইতে মুড়ি প্রভৃতি জলের উপর ছড়াইয়া ফেলিয়া দিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিল। কেবলই মনে হইতে লাগিল, বৌদি উপোস করিয়া আছে। কথাটা সে মনে মনে যত বকম করিয়াই আবৃত্তি করিল, ততবারই তাহার মনের মধ্যে ছুচি ফুটিল। রাত্রে শ্যামলাল ভাৰ্য্যাকে বলিলেন, আমার আর সহ্যু হয় না। ওকে নিয়ে আর বাস করা চলে না । নারায়ণী অবাক হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, কার কথা বলচ ? রামের কথা । তোমার মা আমাকে চার-পাচ দিন ধ’রে ক্রমাগত বলচেন, রাম ওঁকে না-হক অপমান করুচে । আমি পাঁচজন ভদ্রলোক ডেকে বিষয়-আশয় সমস্ত ভাগ ক’রে ওকে আলাদা ক’রে দেব । আমি আর পারি। নে । নারায়ণী স্তম্ভিত হইয়া ক্ষণকাল বসিয়া থাকিয়া বলিলেন, রামকে আলাদা ক’রে দেবে ? ওকথা মুখেও এনে না। ও দুধের ছেলে, বিষয়আশয় নিয়ে কি কবৃবে শুনি ? শ্যামলাল বিদ্রুপ করিয়া বলিলেন, দুধের ছেলেই বটে। আর বিষয়সম্পত্তি নিয়ে ও কি করবে, সে ওই জানে । নারায়ণী বলিলেন, ও জানে না, আমি জানি!! কিন্তু মা বুঝি তোমাকে চার-পাচ দিন ধ’রে ক্রমাগত ওই কথা বলে বেড়াচ্চেন ? শ্যামলাল একটু অপ্ৰতিভ হইয়া ইতস্ততঃ করিয়া বলিলেন, না, উনি কিছুই বলেন নি, লোকেরাও ত চোখ আছে গো ! আমি নিজে কি কিছুই দেখতে পাই নে, তাই তুমি মনে করা ?