পাতা:বিপিনের সংসার - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাস যাইবে ? সামান্য কিছু মুসুরি ছিল, তাহার বদলে চাল না লইলে? চলে কি করিয়া ? এই সব প্ৰজা । ইহাদের নিকট খাজনা আদায় করিয়া তাহাকে চাকুরি বজায় রাখিতে হইবে। অনাদিবাবুর চাকুরি লইয়া সে মস্ত বড় ভুল করিয়াছে। এ সব জিনিস তাহার ধাতে নাই । বাবা কি করিয়া কাজ চালাইতেন সে জানে না, কিন্তু তাহার পক্ষে অসম্ভব । মানী ঠিক পরামর্শ দিয়াছে । ডাক্তারি শিখিতেই হইবে তাহাকে । ডাক্তারি শিখিলে এই সব গরিব লোকের অনেকখানি উপকার করিতেও তো পরিবে । এখানকার আর একজন প্ৰজার কাছে অনেকগুলি টাকা খাজনা বাকি । বিপিন সন্ধ্যার পরে তা চাপ বাড়ি তাগাদ দিতে গেল। গিষা দেখিল, খড়ের ঘরের দাওয়ায় লোকটা শয্যাগত, মলিন লেপি কঁথা গায়ে দিয়া শুইয়া আছে। তিন চারটি পাড়ার লোক নায়েববাবুর আগমনসংবাদ শুনিয়া বাড়ির উঠানে আসিয়া উপস্থিত হইল । রোগীর বিছানা ধ পাশে দুইটি স্ত্রীলোক বসিয়া ছিল, বিপিনকে দেখিয়া ঘোমটা টানিয়া দিল । লোকটির নাম বিশু ঘোষ, জাতিতে কৈবৰ্ত্ত । বিপিনকে সে অনেকবাৰ দেখিয়াছে, কিন্তু বিপিন দাওয়ায উঠিযা বসিতেই তাহার দিকে চাহিত্য বলিল, কে ? ছিরাম ? তামাক দে, ছিদ্রাম খুড়োকে তামাক দে । বিপিন তো অবাক । পরে রোগীর চোখের দিকে চাতিয়া দেখিল, চোেখ দুইটা জবাফুলের মত লাল । ঘোর বিকার। রোগী মানুষ চিনিতে পারিতেছে না । বিপিন বলিল, ওব মাথায় জল দাও । দেখছে কে ? একজন উত্তাব দিল, ফকির সায়েব দেখছেন । -কোথাকার ফকির সায়েব ? ডাক্তার ? -আজ্ঞে না, তিনি ঝাড়ফুক করেন খুব ভাল। তিনি বলেছেন, উপরিভাব হয়েছে !