পাতা:বিপিনের সংসার - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“ইইতে তামাক সাজিয়া আনিয়া তক্তাপোষের উপর বসিয়া জানাল দিয়া বাহিরের দিকে চাহিয়া হ’ক টানিতে লাগিল। জানালার বাহিরেই কোঠার গায়ে লাগানো ছোট্ট তরকারীরর ক্ষেত, বলাই গাত চৈত্র মাসে কুমড়া পুতিয়াছিল। এখন খুব বড় গাছ হইয়া অনেকখানি জায়গা জুড়িয়া লইয়াছে বাগানে। তরকারীর ক্ষেতের পর তাহদের কঁঠাল গাছ, তারপর রাস্তা, রাস্তার ওপারে নবীন বাতুয্যের বঁাশঝাড় ও গোহালি। ঘন ঠাস-বুনানি কালো অন্ধকার বঁাশঝাড়ের সর্বাঙ্গে অসংখ্য জোনাকি জ্বলিতেছে । মনোরমার উপর তাহার সহানুভূতি হইল। বেচারী অবস্থাপন্ন গৃহস্থ ঘরের মেয়ে, তাহদের বাড়ীতে অনেক আশা করিষাই উহার বাপ-মা বিবাহ দিয়াছিলেন । এখন খাইতে পায় না পেট ভরিয়া দুবেলা । পাড়াষ। কোথাও সে বাহির হয় না, সমবয়সী বৌ-বিয়ের সঙ্গে কমই মেশে, কারণ গরীব বলিয়াও বটে এবং বীণার ব্যাপার লইয়াও বটে, নানা অপ্রীতিকর কথা শুনিতে হয় বলিয়া সে কোথাও বড় একটা যায় না । ঘরের কাজে লইষাই থাকে । বিপিন বলিল, কেঁদো না, বলি শোনো । মনোরমা কথা কহিল না, আঁচল দিয়া চোখ মুছিতে লাগিল। আধময়লা শাড়ীর আঁচলটা মাদুর চাইতে খানিকটা মেঝের উপর লুটাইতেছে । সত্যি কষ্ট হয় দেখিলে । -শোনু্যো, আমি কাল কি পরশু বাড়ী থেকে যাই। পিপলিপাড়া গিযে ডাক্তারি করবো ভেবেছি। তুমি কি বলে ? পিপলিপাড়া বেশ গা, চাষাবাসী লোক অনেক । হয়তো কিছু কিছু পাবো । তুমি কি বলে ? স্বামী তাহার মতামত চাহিতেছে, ইহা মনোরমার কাছে এক নূতন জিনিষ বটে। সে একটু আশ্চৰ্য্য হইল, খুসিও হইল। চোখের জল মুছিয়া বিপিনের দিকে চাতিয়া বলিল, তুমি ডাক্তারি জানো ? እ ዓቅ..