পাতা:বিপিনের সংসার - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কামিনী কিছুক্ষণ চুপ করিয়া কি ভাবিল, তারপর হঠাৎ জবাব দিল, আচ্ছা হয়েছে ঢের, আর বলার কােজ নেই বাপু । বেলা হয়েছে, চললাম। আমি। কদিন আছে। এখানে ? --মঙ্গলবার সন্দোবেল কি বুধবার সকালে যাব । মাসীমা, যা বললাম কথাটা মনে রেখ । টাকাটা যদি যোগাড় ক’রে দিতে পারতে, তবে বডড উপকার হ’ত । তোমার কাছে না। চাইব তো কার কাছে চাইব, বল । কামিনী সে কথায় তত কান না দিয়া আপন মনে চলিয়া গেল । যাইবার সময় বলিয়া গেল, তোমার পাইককে কি ওই নটবরের ছেলেটাকে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দিও, পোপে পেকেছে সঙ্গে দেব। মঙ্গলবার বৈকালে কামিনীর কাছে পাওস গেল পচিশটি টাকা । ধোপাখালির হাট হইতে জমিদার-গিন্নীর ফরমাসমতি জিনিষপত্র কিনিধা বিপিন বুধবার শেষ রাত্রির দিকে গরুর গাড়ি করিয়া রওনা হইল এবং বেলা দশটার সময় পলাশপুর আসিয়া পৌছিল। জমিদার-বাড়ি পৌছিবার পূর্বে শুনিল, জামাই বাবু কাল বাত্রে আসিয়া পৌছিয়াছেন। জমিদাববাবুর অবস্থা এখন তত ভাল নম্ব বলিয়া তেমন বড় পাত্রে মেয়েকে দিতে পাবেন নাই । জামাই আইন পাস করিয়া আলিপুর কোর্টে ওকালতি করেন। কলিকাতায় বাড়ি আছে-পৈতৃক বাড়ি, যদিও দেশ এই পলাশপুবের কাছেই নোনীপোড়া । তরিতরকারির ধামা গরুর গাডি হইতে নামাইতে দেখিযা জমিদারগৃহিণী খুশি হইয়া বলিলেন, “ওই দেখ, বিপিন মহল থেকে কত জিনিসপত্র এনেছে । বড় কুমড়োটা কে দিলে বিপিন ? কি চমৎকার কুমড়োটি ! বিপিন বলিল, দেবে। আবার কে ? কাল হাটে কেন । -আর এই পটল, ধিঙে, শাকের ডাটা ? 8