পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সমিতি-কেন্দ্র কিন্তু কথাটা তেমন আগ্রহের সঙ্গে কেউ গ্রহণ করে নি। যাই হোক, প্রায় মাইল ষাটেক ভ্রমণ করবার পর এক পরিচিত পুলিশ কর্মচারীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। কানাইলালের সঙ্গে কয়েকজন বন্ধুও ছিলেন। পুলিশ কর্মচারীটি তাঁদের সদুপদেশ দিয়ে বলেন যে এরকম ঘুরে বেড়ালে পুলিশের সন্দেহ হতে পারে এবং অনর্থক গ্রেপ্তার হবার সম্ভাবনা রয়েছে। কানাইলাল বুঝে দেখলেন, ভবিষ্যতে তাঁর বিরাট কর্মক্ষেত্র পড়ে রয়েছে সুতরাং এখন থেকে পুলিশের হাতে পড়ে কোন লাভ নেই। কাজেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি ভ্রমণের সঙ্কল্প ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

 বিপ্লবী-সমিতি গঠন করার পূর্বে কানাইলাল ও তাঁর সহযোগিদের একটী মিলনকেন্দ্র ছিল। এখনকার যুগে যেমন প্রতিপাড়ায় ক্লাব, বৈঠক দেখা যায় তখনকার যুগে তা ছিল না। বিশেষ চন্দননগরের মত ছোট জায়গায়। কানাইলালের দল সেই অবস্থায় একটি বৈঠক গড়ে তোলে। সেখানে বড় ধরণের আলোচনা হত না, হালকা আমোদ-উৎসবের আয়োজন ছিল। ধীরে ধীরে এই বৈঠকেরই বহু রূপান্তর ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত সভ্যেরা এক একটি বিপ্লবী হয়ে ওঠেন। শোনা যায় এই বৈঠকে কানাইলাল একজন সামান্য সভ্য ছিলেন মাত্র। তবে প্রতি সন্ধ্যায় তিনি আসতেন এবং ঐ বৈঠক-পরিচালিত যে নাট্যসমাজ ছিল সেখানে বসে বসে কোনদিন এসরাজ বাজাতেন কোনদিন বা হার্মোনিয়াম নিয়ে গান গাইতেন। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এসরাজ বাজাতে তিনি জানতেন না, কেবল

৩৩